Tuesday, 4 August 2020

GEOGRAPHICAL THOUGHT

1. ভূগোলে গঠণবাদ বলতে কী বোঝেন ?
প্রত্যক্ষবাদ এবং অভিজ্ঞতা ভিত্তিক জ্ঞানের উপর গুরুত্বপূর্ণ সমলোচনার উদ্দেশ্যে ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ ভাগে ফ্রান্সের ইমিল ডার্কহিম এবং জার্মানের ফ্রেডরিখ রাটজেল এঁর বিতর্কের মধ্যদিয়ে আধুনিক ভূগোলে গঠণবাদের সূচনা হয়, যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ফ্রান্সে প্রধান্য লাভ করে l এই দর্শনে আপাত ভাবে দেখা ও মানুষের তৈরী বিন্যাসের ভিতরে গিয়ে মূল তথ্যটি অনুসন্ধানের কথা বলা হয়েছে l এই দৃষ্টিভঙ্গীর প্রধান প্রবক্তা ছিলেন নৃতাত্ত্বিক ক্লদ - লেভি - স্টাউস এবং মনোবিজ্ঞানী জ্যাঁ পিয়াগেট l 

2. অসাম্যের ভূগোল কী ?
যে ভূগোলে সামাজিক,রাজনৈতক,অর্থনৈতিক,সাংস্কৃতিক বা দৈশিক বৈশিষ্টের অসম বন্টনের উপর সমীক্ষা করা হয় তাকে অসাম্যের ভূগোল বলা হয় l এর উদ্দেশ্য হল অসাম্যের প্রকৃতি ও কারণ সাধারণীকরনের মাধ্যমে দৈশিক অসাম্যের তীব্রতাকে গভীর ভাবে অনুধাবন করা l 
3. প্রণালীবদ্ধ ভূগোল কাকে বলে ?
ভৌগোলিক আলোচনায় যখন ভৌগোলিকগণ প্রত্যক্ষবাদী অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে বিভিন্ন ঘটনাবলীর আলোচনা সুনির্দিষ্ট প্রণালী এবং কার্যকরন তত্বের ভিত্তিতে ব্যাখ্যা করে, তখন তাকে প্রণালীবদ্ধ ভূগোল বলে l এই মতবাদ অনুসারে ভূগোল অন্যান্য বিষয় থেকে আলাদা নয় l স্কিফর মনে করেন প্রণালী বদ্ধ ভূগোল সমধর্মী প্রক্রিয়া থেকে উত্পন্ন নির্দিষ্ট কতগুলি বৈশিষ্ট কে সমীক্ষা করে l

4. কালিক ভূগোল কাকে বলে ?
ভূগোলের যে শাখায় মানুষের কাজ করার ক্ষমতা, বিভিন্ন কাজের পরস্পর নির্ভরশীলতা ও কাজ করার অধিকারের ওপর পরিসর ও কালের নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে আলোচনা করা হয় তাকে কালিক ভূগোল বলে l সুইডিশ ভূগোলবিদ হ্যাগার স্ট্রেন্ড (1970) কালিক ভূগোলের প্রবক্তা l শিক্ষার বিষয় হিসাবে ভূগোলের বিকাশ সমীক্ষায় Pred (1979) কালিক ভূগোলের পদ্ধতি ব্যবহার করেছেন l 


5. মূলক ভূগোল কাকে বলে ?
ভূগোলের মূল বিষয় গুলির অভিমুখে মনযোগ আকর্ষণ করে জীবনের গুণগত মান বিস্তারের জন্য সমাজ, অর্থনীতি ও রাষ্ট্রনীতিকে সামগ্রিক ভাবে পর্যবেক্ষণ করে পুরাতন চিন্তাধারাগুলির আমূল পরিবর্তনের চেষ্টা ভূগোলের যে শাখায় করা হয় তাকে মূলক ভূগোল বলা হয় l  ভূগোলের এই দৃষ্টিভঙ্গি 1970 খৃষ্টাব্দে মার্কিন যুক্তরাষ্টের ভিয়েতনাম যুদ্ধ এবং কৃষ্ণাঙ্গ দের সামাজিক অধিকার লাভের আন্দোলনের পট্টভূমিকায় জন্ম নেয় l  মার্কসীয় দার্শনিক ডেভিড হার্ভে মূলক ভূগোলের উত্তোরক l 

6. নারীবাদ ভূগোল বলতে কী বোঝেন ?
যে ভূগোলে দুই লিঙ্গের (নারী ও পুরুষ) রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমতার ভিত্তিতে উভয় লিঙ্গের মধ্যে সমান ক্ষমতা বিভাজনের জন্য পিতৃতান্ত্রিক সমাজের প্রতিষ্ঠিত নিয়ম গুলোর পরিবর্তন আলোচ্য বিষয় তাকে নারীবাদ ভূগোল বলে l 1970 দশকের মাঝামাঝি সময়ে এই ভূগোলের পটভূমি তৈরী হয় l 

7. প্রয়োগবাদ কী ?
 ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ দিকে এবং বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে পরীক্ষা- নিরীক্ষা ও মূল্যায়নের মাধ্যমে বিশ্বাসের পর্যায়ক্রমিক পুনর্গঠনের ভিত্তিতে গড়ে ওঠা দার্শনিক মতবাদ হল প্রয়োগবাদ l এর প্রাথমিক প্রবক্তা ছিলেন চার্লস পেরিক এবং উইলিয়াম জেমস্ l 

8. অস্তিত্ব বাদ কী ?
 অস্তিত্ব বাদ একটি দার্শনিক মত, যা মানুষের স্বত্বা এবং অস্তিত্ব এর মধ্যে পার্থক্য দেখায় l এর মূল বক্তব্য হল, কোন মানুষ বিশেষ বিশেষ প্রাকৃতিক পরিবেশ অথবা বিশেষ কোন সাংস্কৃতিক প্রদত্ত একজন কেও নয় বরং সে ক্রমাগত চেষ্টার মাধ্যমে নিজেকে অর্থাত্ নিজের অহম্ কে নির্মাণ করে l  অস্তিবাদী ভূগোল মানবতাবাদী ভূগোলের একটি বিশেষ ক্ষেত্র l এই মতবাদের অন্যতম প্রবক্তা হলেন ফরাসী দার্শনিক সার্ত্র l 

9. সামাজিক নিয়ন্ত্রণ বাদ কী ?
ভূগোলবিদ জেমস্ প্রেস্টন এঁর মতে পরিবেশ মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করে না, মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করে তার সংস্কৃতি ও সমাজ ব্যবস্থা l  অর্থাত্ মানুষ তার নিজের তৈরী নিয়মকানুনে আবদ্ধ;  একেই সামাজিক নিয়ন্ত্রণবাদ বলা হয় l দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে অস্ট্রিয়া, হল্যান্ড ও সুইডেনের ভৌগোলিক দের মধ্যে সামাজিক নিয়ন্ত্রণবাদের চিন্তাধারা ছড়িয়ে পড়ে l 

10. ভূগোলে প্রণালী বদ্ধতা বলতে কী বোঝেন ?
 যখন কোন প্রাকৃতিক বিষয় বিজ্ঞানের উপর ভিত্তি করে সামগ্রিক প্রণালী রুপে আলোচিত হয় তখন তাকে প্রণালীবদ্ধতা বলে l Systematic  Approach অনুসারে ভৌগোলিকেরা যখন বিভিন্ন ঘটনাবলীকে একটি প্রণালী রুপে আলোচনা করে জটিল বিষয়গুলিকে সাধারণ প্রণালী তত্বে পরিণত করে তখন তাকে ভূগোলের প্রণালীবদ্ধতা বলে l ইহা দুই প্রকারের যথা :- (i) উন্মুক্ত প্রণালী ও (ii) বদ্ধ প্রণালী l 
যেমন, সারা পৃথিবীর নদীতন্ত্র বোঝাতে River System কে তুলেধরা হয় l

শিশু শিক্ষায় পরিবেশ বিদ্যা

1. পরিবেশ বিদ্যা (Environmental Studies) বলতে কি বোঝায় ? 
উঃ পরিবেশ বিদ্যা হ'ল পরিবেশব্যবস্থার বৈজ্ঞানিক গবেষণা এবং জীবের উপর তার সহজাত বা প্ররোচিত পরিবর্তনের প্রভাব সম্পর্কে তথ্য উপস্থাপনের ক্ষেত্র ।  পরিবেশ বিদ্যায় একাধারে পরিবেশের প্রাকৃতিক এবং জৈবিক চরিত্রগুলির অধ্যয়ন এবং সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কারণ এবং পরিবেশের উপর মানুষের প্রভাব সমন্ধে আলোচনা করা হয় । অন্যভাবে বলা যায় - 'Environmental studies refer to an extensive and systematic study of nature/environment and of its physical, biological, social, and cultural factors, and the nature and characteristics of relationship between man and environment.'

2. কোন সময় পরিবেশ বিদ্যা বিষয়টি ভারতীয় শিক্ষা ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত হয় ? 
উঃ 1970 এর দশকে NCERT প্রবর্তিত “The curriculum for the ten year school-A framework" এর ভিত্তিতে ভারতীয় শিক্ষাব্যবস্থায় পরিবেশ বিদ্যা বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত হয় । 

3. স্বাধীনতা পূর্ববর্তী সময়ে কোন সময় পর্যন্ত পরিবেশ বিষয়টি বিদ্যালয় শিক্ষায় অন্তর্ভুক্ত ছিল ? 
উঃ স্বাধীনতা পূর্ববর্তী সময়ে 1930 সালের প্রারম্ভিক সময় পর্যন্ত পরিবেশ বিষয়টি বিদ্যালয় শিক্ষায় অন্তর্ভুক্ত ছিল । 

4. ভারতীয় শিক্ষা ব্যবস্থায় পরিবেশ শিক্ষা কি নামে পরিচিত ? 
উঃ শিক্ষা ব্যবস্থায় পরিবেশ শিক্ষা বিষয়টি Environmental Education (EE), Environmental Science (ES) এবং Environmental Assessment (EA) ইত্যাদি বিভিন্ন মনে অভিহিত হয় তবে National Curriculum Framework ভারতীয় শিক্ষা ব্যবস্থায় পরিবেশ শিক্ষা বিষয়টির জন্য Environmental Studies (E.V.S.) নামটি প্রবর্তন করে । 

5. কোন সময় ভারতীয় শিক্ষা ব্যবস্থায় বিদ্যালয় স্তরে সর্বাত্মকভাবে পরিবেশবিদ্যা বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত হয় ? 
উঃ 1986 সালে NCF এর প্রভাবে ভারতীয় শিক্ষা ব্যবস্থায় বিদ্যালয় স্তরে সর্বাত্মকভাবে পরিবেশবিদ্যা বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত হয় এবং Plan of Action, 1992  এর প্রভাবে তা গুরুত্বপূর্ণ আকার ধারণ করে । 

6. Plan of Action, 1992 অনুযায়ী পরিবেশ বিদ্যার মূল আলোচ্য বিষয় হিসাবে কয়টি কেন্দ্রীয় বিষয় অন্তর্গত হয় ? 
উঃ Plan of Action,1992 অনুযায়ী পরিবেশ বিদ্যার মূল আলোচ্য বিষয় হিসাবে তিনটি কেন্দ্রীয় বিষয় অন্তর্গত হয়, যথাঃ i) পরিবেশগত সমস্যাবলী (Environmental Issues), ii) পরিবেশগত উদ্বেগ (Environmental Concerns) এবং iii) পরিবেশগত সংরক্ষণ (Environmental Conservation) । 

7. ভারতীয় শিক্ষাব্যবস্থায় কখন এবং কেনো Green Schools Programme আরম্ভ হয় ? 
উঃ ভারতীয় শিক্ষাব্যবস্থায় 2006 সালে বিদ্যলয় শিক্ষার্থীদের মানসিকতা ও জীবনধারার মৌলিক এবং দীর্ঘমেয়াদী পরিবর্তন সাধনের জন্য  বিদ্যালয় স্তরে Green Schools Programme আরম্ভ হয় । বর্তমানে এই কার্যাবলীতে সারা ভারতে প্রায় 5000 এর অধিক বিদ্যালয় যুক্ত হয়েছে । 

8. Green Educators’ Network কখন গঠিত হয় ? 
উঃ পরিবেশবিদ্যা সংক্রান্ত বিভিন্ন আলোচনার প্রয়োজনে University Grants Commission (UGC) 2016 সালের জানুয়ারিতে Green Educators’ Network গঠন করে । 

9. অ-প্রথাগত ক্ষেত্র এবং গ্রামীণ ও শহরাঞ্চলের বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পরিবেশ সচেতনতার বিষয়ে কে গবেষণা করেন ? 
উঃ Regional Institute of Education এর Bhopal V. P. Gupta এবং তার সহযোগী  J.S Grewal ও J.S Rajut 1981 সালে অ-প্রথাগত ক্ষেত্র এবং গ্রামীণ ও শহরাঞ্চলের বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পরিবেশ সচেতনতার বিষয়ে গবেষণা করেন । 

10. ভারতীয় শিক্ষা ব্যবস্থায় মহাবিদ্যালয় স্তরে জীবনব্যাপী পরিবেশ শিক্ষার পাঠক্রম কে কখন তৈরির চেস্টা করেন ? 
উঃ গুজরাটের Maharaja Sayajirao University of Baroda এর অধ্যাপক S.G. Pai 1981 সালে ভারতীয় শিক্ষা ব্যবস্থায় মহাবিদ্যালয় স্তরে জীবনব্যাপী পরিবেশ শিক্ষার পাঠক্রম তৈরির চেস্টা করেন ।

শিশু মনস্তাত্ত্বিক কিছু গ্রন্থ Part 3

31. "The Psychology of the Child" লেখকঃ J.Piaget ও B. Inhelder, প্রথম প্রকাশিত হয় 1969 সালে । 

32. "The Education of the Emotions" লেখকঃ Margaret Phillips, প্রথম প্রকাশিত হয় 1937 সালে । 

33. "Psychological Development through Life Span" লেখকঃ Sidney Leavitt Pressey ও Raymond G. Kuhlen, প্রথম প্রকাশিত হয় 1965 সালে ।

34. "Emotion and Memory" লেখকঃ David Rapaport, প্রথম প্রকাশিত হয় 1942 সালে ।

35. "The Psychology of Feeling and Emotion" লেখকঃ Christian A. Ruckmick, প্রথম প্রকাশিত হয় 1936 সালে ।

36. "Children Development and Relationships" লেখকঃ M.S  Smart ও R.C. Smart, প্রথম প্রকাশিত হয় 1967 সালে ।

37. "The Measurement of Emotion" লেখকঃ W. Whately Smith, প্রথম প্রকাশিত হয় 1922 সালে ।

38. "Mental Health and Infant Development" লেখকঃ Kenneth Soddy, প্রথম প্রকাশিত হয় 1967 সালে ।
39. "Jealousy - A Psychological Study" লেখকঃ Sokoloff Boris 1948 সালে ।

40. "Hand Book of Experimental Psychology" লেখকঃ Stanley Smith Stevens, প্রথম প্রকাশিত হয় 1951 সালে ।

41. "Discussions on Child Development" লেখকঃ James Mourilyan Tanner
ও Barbel Elisabeth Inhelder, প্রথম প্রকাশিত হয় 1960 সালে ।

42. "Child Psychology for Professional Workers" লেখকঃ Florence M Teagarden, প্রথম প্রকাশিত হয় 1946 সালে ।

43. "Psychological Principles" লেখকঃ James Ward, প্রথম প্রকাশিত হয় 1918 সালে ।

44. "Motivation and Emotion: A Survey of the Determinants of Human and Animal Activity" লেখকঃ Paul Thomas Young, প্রথম প্রকাশিত হয় 1961 সালে ।

45 . "The Development of Social Maturity" লেখকঃ David Clarence McClelland, প্রথম প্রকাশিত হয় 1982 সালে ।

পরিবেশবিদ্যার আলোচনাক্ষেত্র

1. পরিবেশ (Environment) বলতে কি বোঝায় ? 
উঃ পরিবেশ বলতে বোঝায় আমাদের চারপাশের জৈব ও অজৈব ভৌতিক উপাদানগুলির পারস্পরিক মিথস্ক্রিয়ার ফলে উদ্ভুত প্রণালীকে । A. Panneerselvam এবং Mohana Ramakrishnan 1996 সালে প্রকাশিত তাদের "Environmental Science Education" নামক গ্রন্থে পরিবেশের সংজ্ঞা প্রসঙ্গে উল্লেখ করেন “Environment is anything immediately surrounding an object and exerting a direct influence on it." । ভারতীয় লেখক B. K. Sharma এবং H. Kaur তাদের "Environmental Chemistiy" (1997-98) নামক গ্রন্থে পরিবেশের সংজ্ঞা প্রসঙ্গে বলেন “Environment is the sum o f all social, economical, biological, physical or chemical factors, which constitute the surroundings of man, who is both creator and mouldier of his environment.” 

2. পরিবেশের উপাদান (Components) গুলি কিকি ?
উঃ পরিবেশ মূলতঃ তিনটি বৃহৎ উপাদানের সমন্বয়ে গঠিত, যথাঃ i) বায়ুমণ্ডল (Atmosphere), ii) বারিমণ্ডল (Hydrosphere) এবং iii) শিলামণ্ডল (Lithosphere) । 

3. পরিবেশ বিদ্যার উপাদান (Elements) গুলি কিকি ? 
উঃ Samuel Adegboyega University এর "Elements of Environmental Studies. In General Studies Compendium." গবেষণাপত্র অনুযায়ী পরিবেশ বিদ্যা বিষয়টি তিনটি উপাদানের সমন্বয়ে বিকশিত হয়েছে, যথাঃ i) প্রাকৃতিক উপাদান (Physical Elements), ii) জৈবিক উপাদান (Biological Elements) এবং iii) সাংস্কৃতিক উপাদান (Cultural Elements) । 

4. পরিবেশ বিদ্যার আলোচ্য প্রাকৃতিক উপাদানগুলি (Physical Elements) কিকি ? 
উঃ পরিবেশ বিদ্যার আলোচ্য প্রাকৃতিক উপাদানগুলি তথা মানুষের আবাসস্থল, সুযোগসুবিধা এবং সীমাবদ্ধতাগুলির পরিবর্তনশীল চরিত্র নির্ধারণকারী প্রভাবকগুলি হলঃ ক্ষেত্র (Space), ভূমিরুপ (Landforms), জলভাগ (Water Bodies), জলবায়ু (Climate), মৃত্তিকা (Soils), শিলা (Rocks) এবং খনিজ (Minerals) ।  

5. পরিবেশ বিদ্যার আলোচ্য জৈবিক উপাদান (Biological Elements) কিকি ?
উঃ পরিবেশ বিদ্যার আলোচ্য জৈবিক উপাদানগুলি হলঃ উদ্ভিদ (Plants), প্রাণী (Animals), অনুজীব (Microorganisms) এবং মনুষ্য সৃষ্ট জীবমণ্ডল (Man Constitute the Biosphere) ।


6. পরিবেশ বিদ্যার আলোচ্য সাংস্কৃতিক উপাদান (Cultural Elements) কিকি ?
উঃ পরিবেশ বিদ্যার আলোচ্য সাংস্কৃতিক উপাদানগুলি হলঃ মনুষ্য সৃষ্ট সামাজিক পরিবেশ গঠনের বিভিন্ন ব্যবস্থা যথাঃ অর্থনৈতিক (Conomic) অবস্থা, সামাজিক (Social) অবস্থা এবং (Political) অবস্থা । 

7. পরিবেশ বিদ্যায় কয় প্রকার পরিবেশের আলোচনা করা হয় ? 
উঃ পরিবেশ বিদ্যায় মূলতঃ তিন প্রকার পরিবেশের আলোচনা করা হয়, যথাঃ i) প্রাকৃতিক পরিবেশ (Physical Environment), ii) সামাজিক পরিবেশ (Social Environment) এবং iii) মনোবৈজ্ঞানিক পরিবেশ (Psychological Environment) । 

8. পরিবেশ বিদ্যায় আলোচিত প্রাকৃতিক পরিবেশ বলতে কি বোঝায় ? 
উঃ পরিবেশ বিদ্যায় আলোচিত প্রাকৃতিক পরিবেশ বলতে বোঝায়, কোন ভৌগোলিক ক্ষেত্রে জীবন বিকাশের প্রয়োজনীয় আনুষঙ্গিক উপাদান যথাঃ আবহাওয়া, জলবায়ু, ভূমিরূপ ইত্যাদি নানারুপ প্রাকৃতিক উপাদানের সমন্বিত অবস্থাকে । 

9. পরিবেশ বিদ্যায় আলোচিত সামাজিক পরিবেশ বলতে কি বোঝায় ? 
উঃ পরিবেশ বিদ্যায় আলোচিত সামাজিক পরিবেশ বলতে বোঝায়, মানুষ ও মনুষ্য সভ্যতার বিকাশের উপযোগী নৈতিক, সাংস্কৃতিক ও প্রাক্ষোভীক কার্যাবলীর প্রভাবে সৃষ্ট অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক পরিবেশের সমষ্টিগত অবস্থাকে । 

10. পরিবেশ বিদ্যায় আলোচিত মনোবৈজ্ঞানিক পরিবেশ বলতে কি বোঝায় ? 
উঃ মনোবৈজ্ঞানিক পরিবেশ মনোবৈজ্ঞানিক ব্যক্তিগত বা সমষ্টিগত ব্যক্তিত্ব এবং তার প্রভাবে উদ্ভুত পরিবেশ সমন্ধে বুঝতে আমাদের সক্ষম করে । অর্থাৎ উপরোক্ত প্রাকৃতিক ও সামাজিক পরিবেশের বিকাশে মানবীয় দৃষ্টিভঙ্গি, পরিকল্পনা, কৌশল ইত্যাদির সম্মিলিত অবস্থার ফলে উদ্ভুত পরিবেশকে মনোবৈজ্ঞানিক পরিবেশ বলা যায় । যেমনঃ বিদ্যালয়ের মনোবৈজ্ঞানিক পরিবেশ এবং কোন প্রতিষ্ঠানের কার্যনির্বাহী দপ্তরের মনোবৈজ্ঞানিক পরিবেশ সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র ।

স্বাধীনতা পূর্ববর্তী ভারতীয় শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়ন পর্যায় (Pre-Independence Indian Education System)

1. উডের ড্যাসপ্যাচে শিক্ষার জন্য ভাষার ক্রমরুপ বিকাশের সুপারিশটি কিরকম ছিল ? 
উঃ উডের ড্যাসপ্যাচে ভাষা হিসাবে প্রাথমিক স্তরে আঞ্চলিক ভাষাকে, মাধ্যমিক স্তরে অ্যাংলো-আঞ্চলিক ভাষা এবং মহাবিদ্যালয় স্তরে ইংরাজি ভাষাকে গ্রহণ করে শিক্ষা ব্যবস্থা বিকাশের সুপারিশ করা হয় । 

2. উডের ড্যাসপ্যাচে ভারতীয় শিক্ষাব্যবস্থার বিকাশে যেসমস্ত পদক্ষেপ নেওয়া হয় সেগুলো কিকি ? 
উঃ উডের ড্যাসপ্যাচে ভারতীয় শিক্ষাব্যবস্থার বিকাশে যেসমস্ত পদক্ষেপ নেওয়া হয় সেগুলো হলঃ i. ভারতের প্রত্যেকটি প্রদেশে শিক্ষা বিভাগ (Education Department) গড়ে তোলার উপর জোর দেওয়া হয় । ii. লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের আদলে ভারতের বৃহৎ শহরগুলোতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয় । iii. প্রত্যেক জেলায় অন্ততঃ একটি সরকারি বিদ্যালয় স্থাপনের কথা উল্লেখ করা হয় । iv. ভারতীয়দের স্থানীয় ভাষায় প্রশিক্ষণের উপর জোর দেওয়ার কথা বলা হয় । v. প্রথমিক স্তর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় স্তর পর্যন্ত সুনিয়ন্ত্রিত শিখন ব্যবস্থার প্রবর্তনের কথা বলা হয় । vi. অনুমোদিত বেসরকারী স্কুলগুলিকে সহায়তার জন্য অনুদান দেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয় । vii. সরকারকে নারী শিক্ষার প্রসারে গুরুত্ব দিতে বলা হয় ইত্যাদি । 

3. উডের ড্যাসপ্যাচ অনুযায়ী ভারতে কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের সূচনা হয় ? 
উঃ উডের ড্যাসপ্যাচ অনুযায়ী ভারতে 1857 সালে কলকাতা, মুম্বাই এবং মাদ্রাস বিশ্ববিদ্যালয়, 1882 তে পঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয় এবং 1887 তে এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের সূচনা হয় । 

4. উডের ড্যাসপ্যাচ অনুযায়ী ভারতীয় শিক্ষাব্যবস্থায় প্রবর্তিত অনুদান - সহায়তা ব্যবস্থার (Grant - in-aid system) শর্তগুলি কিকি ছিল ? 
উঃ উডের ড্যাসপ্যাচ অনুযায়ী ভারতীয় শিক্ষাব্যবস্থায় প্রবর্তিত অনুদান - সহায়তা ব্যবস্থার শর্তগুলি হলঃ i. স্কুলগুলি অবশ্যই ধর্মনিরপেক্ষ শিক্ষা প্রদান করবে। ii. স্কুল কর্তৃপক্ষ/পরিচালককে স্কুলটি ভালভাবে চালাতে হবে । iii. সময়ে সময়ে রাজ্য পরিদর্শন করতে বিদ্যালয়কে সম্মতি দিতে হবে । iv. অনুদান নিয়ন্ত্রণের জন্য বিদ্যালয়কে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত যে কোনও বিধি অনুসরণ করতে হবে । v. বিদ্যালয়কে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ফি নিতে হবে ইত্যাদি ।


5. উডের ড্যাসপ্যাচ অনুযায়ী শিক্ষা নীতির লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য গুলি কিকি ছিল ? 
উঃ ডেসপ্যাচ প্রথমে ভারতে কোম্পানির শিক্ষানীতিটির লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য সম্পর্কে আলোকপাত করে। এটি কোম্পানির অন্যান্য দায়িত্ব অপেক্ষা ভারতীয় শিক্ষার সংস্থার সামগ্রিক দায়িত্বকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার প্রদান করে । ডেসপ্যাচের উল্লেখযোগ্য লক্ষ্যগুলি হলঃ i. ভারতীয়দের কাছে পশ্চিমা জ্ঞান, পশ্চিমা সংস্কৃতি সম্পর্কিত তথ্য সরবরাহ করা। ii. ভারতের স্থানীয়দেরকে শিক্ষিত করা যাতে এক শ্রেণির সরকারী কর্মচারী তৈরি করা যায়। iii. বৌদ্ধিক বিকাশ এবং তরুণ প্রজন্মের নৈতিক চরিত্রকে উত্থাপন করা। iv. ভারতীয় জনগণের ব্যবহারিক এবং বৃত্তিমূলক দক্ষতা বিকাশ করা যাতে আরও বেশি বেশি নিবন্ধ (Articles) রচনা করা যায় এবং সেই পণ্যগুলির ব্যবহারের জন্য একটি ভাল বাজার তৈরি করা যায়।

6. ভারতে নিযুক্ত প্রথম শিক্ষা কমিশন (Indian Education Commission) এর নাম কি ? 
উঃ ভারতে নিযুক্ত প্রথম শিক্ষা কমিশন হলঃ Hunter Commission (1882-83)

7. কে কখন হান্টার কমিশন নিয়োগ করেন ? 
উঃ Sir Willium Hunter এর নেতৃত্বে এবং আরো 20 জন প্রতিনিধি সহ একটি গঠিত কমিশন Lord Ripon 1882 সালের 3রা ফেব্রুয়ারি তে নিয়োগ করেন যা হান্টার কমিশন নামে পরিচিত । 

8. হান্টার কমিশনে কোন কোন ভারতীয় প্রতিনিধি ছিলেন ? 
উঃ হান্টার কমিশনে ভারতীয় প্রতিনিধি হিসাবে ছিলেন সৈয়দ মাহমুদ, ভূদেব মুখার্জী, আনন্দ মোহন ঘোষ এবং কাশীনাথ ত্রিম্বক তেলং । 

9. হান্টার কমিশনের মূল লক্ষ্য কি ছিল ? 
উঃ হান্টার কমিশনের মূল লক্ষ্য ছিল উডের ডেসপাচের সুপারিশগুলি কতটা বাস্তবায়িত হয়েছে তার মূল্যায়ন করা।

10. হান্টার কমিশন তার মূল লক্ষ্য পূরণের জন্য কোন বিষয়ে তদন্ত করে ? 
উঃ কমিশন তার মূল লক্ষ্য পূরণের জন্য নিম্নলিখিত তদন্তগুলি পরিচালনা করে, যথাঃ i. প্রাথমিক শিক্ষার অবস্থান। ii. রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের অবস্থান। iii. মাধ্যমিক শিক্ষার অবস্থান । iv. শিক্ষা ক্ষেত্রে মিশনারিদের কাজ । এবং v. বেসরকারী উদ্যোগের প্রতি সরকারের মনোভাব ইত্যাদি ।

পরিবেশ বিদ্যা শিক্ষণ পদ্ধতি

1. শিক্ষণ পদ্ধতি বলতে কি বোঝায় ? 
উঃ শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা আকর্ষণীয় করতে এবং সহজেই হৃদয়ঙ্গম করানোর জন্য পাঠক্রমের উপাদানগুলিকে বেছে নিয়ে সুসজ্জিতভাবে উপস্থাপনের জন্য শিক্ষকদের ব্যবহৃত নীতি ও পদ্ধতিগুলিকে শিক্ষণ পদ্ধতি বলা হয় । অন্যভাবে বলা যায় শিক্ষণীয় বিষয়কে সহজ ও যথার্থভাবে শিক্ষার্থীদের কাছে উপস্থাপনের জন্য শিক্ষাকার্যের সঙ্গে স্থান-কাল-পাত্রের সামঞ্জস্যবিধান করে কোন পদ্ধতির প্রয়োগই হল শিক্ষণ পদ্ধতি । কোন একটি পদ্ধতির উপযোগীতা নির্ভর করে কে, কীভাবে, কাদের উপর, কী উদ্দেশ্যে সেই পদ্ধতির প্রয়োগ করবে তার উপর । 
 
2. পরিবেশবিদ্যা শিখনে পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ কোন কোন পদ্ধতি ব্যবহারের কথা বলে ? 
উঃ পরিবেশবিদ্যা শিখনে পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ i) গল্প বলা পদ্ধতি, ii) পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি, iii) আলোচনা পদ্ধতি, iv) নাটকীয় বা অভিনয় পদ্ধতি, v) আবিষ্কার পদ্ধতি, vi) ক্ষেত্র সমীক্ষা পদ্ধতি, vii) প্রতিপাদন পদ্ধতি, viii) সমস্যা সমাধান পদ্ধতি, ix) প্রকল্প পদ্ধতি অনুসরণের কথা বলেছেন । 

3. পরিবেশবিদ্যা শিখনে গল্প বলা পদ্ধতি (Story-Telling Method) বলতে কি বোঝায় ? 
উঃ প্রাথমিক স্তরের শিশু শিক্ষার্থী মূলত নরম মনের হয়ে থাকে । শিক্ষার বিষয়গুলি তাদের কাছে বিস্ময় । তাত্বিক বা বাগ্ময় আলোচনা এদের কাছে বোঝা তাই ছোট ছোট কথার মাধ্যমে গল্পের ছলে কোন বিষয়কে উপস্থাপন করলে শিক্ষার্থী বিষয়ের প্রতি আকৃষ্ট হয় । শিশু শিক্ষায় গল্প বলা পদ্ধতি বলতে বোঝায় গল্পের মাধ্যমে রোমাঞ্চকর ও কৌতূহলী পরিবেশ সৃষ্টি করে চিত্তাকর্ষকভাবে বিষয়বস্তুর উপস্থাপন । 

4. প্রাথমিক স্তরের কোন শ্রেণির জন্য গল্প বলা পদ্ধতি অনুসরণ আদর্শ ? 
উঃ প্রাথমিক স্তরের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির জন্য গল্প বলা পদ্ধতি অনুসরণ আদর্শ, তবে অন্যান্য শ্রেণিগুলিতেও এই পদ্ধতি অনুসরণ করা যায় । এই স্তরের শিক্ষার্থীরা স্বাভাবিকভাবেই গল্পের প্রতি আকৃষ্ট হয় ফলে শিখন সঞ্চালন সহজ হয় । 

5. প্রাথমিক স্তরে কোন কোন বিষয়কেন্দ্রিক গল্প বিশেষ উপযোগী ? 
উঃ প্রাথমিক স্তরে ঐতিহাসিক, জীবনীমূলক, বীরত্ব গাঁথা, যুদ্ধ, পারিবারিক উৎসব, আনন্দ মূলক, ভ্রমণমূলকখেলাধুলা সংক্রান্ত, খাদ্য ও অভ্যাস ইত্যাদি বিষয়কেন্দ্রিক গল্প বিশেষ উপযোগী । 


6. প্রাথমিক স্তরে গল্প বলা পদ্ধতি অনুসরণের সুবিধাগুলি কিকি ? 
উঃ প্রাথমিক স্তরে গল্প বলা পদ্ধতি অনুসরণের সুবিধাগুলি হলঃ i) গল্প বলা পদ্ধতি সহজেই শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করে । ii) গল্প পদ্ধতির মাধ্যমে নির্দিষ্ট সময়ে অধিক সংখ্যক শিক্ষার্থীদের কার্যকরভাবে শিক্ষাদান সম্ভব হয় । iii) শিক্ষক/শিক্ষিকার কল্পনা শক্তিতে গল্পের মাধ্যমে উপস্থাপিত পাঠ্য বিষয়বস্তু শিক্ষার্থীদের কাছে আকর্ষক পরিবেশ তৈরি করে ফলে অবচেতন মনে সহজেই বিষয়গুলি সঞ্চালিত হয় । iv) গল্প বলতে বলতেই শিক্ষক/শিক্ষিকা প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সুবিধা, অসুবিধা, বোধগম্যতা ইত্যাদি বিষয়গুলি সম্পর্কে ধারণা গঠন করতে পারে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সক্ষম হন । v) এই পদ্ধতির মাধ্যমে বিস্তর, জটিল ও গুরুগম্ভীর বিষয়কেও সহজ-সরল ও ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য ভাবে উপস্থাপন করা সম্ভব হয় । 

7. প্রাথমিক স্তরে গল্প বলা পদ্ধতি অনুসরণের অসুবিধাগুলি কিকি ?
উঃ প্রাথমিক স্তরে গল্প বলা পদ্ধতি অনুসরণের অসুবিধাগুলি হলঃ i) প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থী সাধারণত চঞ্চল প্রকৃতির হওয়ায় অনেকসময় গল্প শোনার ধৈর্য হারিয়ে ফেলে আবার শিক্ষক/শিক্ষিকা সকল শিক্ষার্থীর দিকে সমান লক্ষ্য রাখতেও পারে না ফলে অনেকসময় গল্প শিক্ষার্থীদের কাছে গুরুত্বহীন হয়ে ওঠে । ii) পাঠ্য পুস্তকের সমস্ত বিষয়কে গল্পের মাধ্যমে উপস্থাপন করা সম্ভব হয় না । iii) গল্প পদ্ধতির বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় সময়ের অভাব অনেক সময় পদ্ধতির সার্থক প্রয়োগকে খর্ব করে । iv) এই পদ্ধতিতে পাঠদানে মেধাবী শিক্ষার্থী তাদের বুদ্ধি খাটানোর সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয় । v) গল্প পদ্ধতিতে শিক্ষার্থী অধিক মাত্রায় শিক্ষক/শিক্ষিকা নির্ভরশীল হওয়ায় স্বাধীনভাবে বিষয় অনুশীলনের ক্ষমতা খর্ব হয় । 

8. পরিবেশবিদ্যা শিখনে পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি (Observation Method) বলতে কি বোঝায় ? 
উঃ যেকোনো বিষয়ে আদর্শ জ্ঞানলাভের উপায় হল তথ্য ও ঘটনাবলী পর্যবেক্ষণ করা । পরিবেশবিদ্যা জ্ঞানের বিকাশের জন্য শিক্ষার্থী নিজে উপস্থিত থেকে যখন শিক্ষকের সহায়তায় কোন বিষয়কে অবলোকন করে সেই বিষয় সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে তখন তাকে পর্যবেক্ষণ পদ্ধতিতে শিখন বলে । শিক্ষার্থীর স্বাভাবিক কৌতুহলতার চরিত্রকে কাজে লাগিয়ে শিক্ষক এভাবে কার্যকরী পাঠদানে তাদের উদ্বুদ্ধ করে থাকেন । 

9. পরিবেশবিদ্যা শিখনে পর্যবেক্ষণ পদ্ধতির মাধ্যমে শিক্ষণ কোন কোন বিষয়ে শিক্ষার্থীদের জ্ঞান আহরণে সহায়তা করে ? 
উঃ পরিবেশবিদ্যা শিখনে পর্যবেক্ষণ পদ্ধতির মাধ্যমে প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থী পরিবেশের বিভিন্ন সজীব ও নির্জীব উপাদান সমন্ধে জ্ঞান অর্জন করতে পারে । বিভিন্ন বিষয় যথা - উদ্ভিদ, প্রাণী, ফল, ফুল, শাকসবজি, আবাসস্থল, যানবাহন ইত্যাদির নাম জানতে পারে । পারিবারিক সম্পর্ক, পোশাকের ব্যবহারের সময়কাল ও বিভিন্ন পেশার সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির পোশাক, বিভিন্ন রঙ সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে সক্ষম হয় । 

10. পরিবেশবিদ্যা শিখনে পর্যবেক্ষণ পদ্ধতির সুবিধাগুলি কিকি ? 
উঃ পরিবেশবিদ্যা শিখনে পর্যবেক্ষণ পদ্ধতির সুবিধাগুলি হলঃ i) পর্যবেক্ষণ পদ্ধতিতে শিশু শিক্ষার্থীদের মনে পরিবেশ অনুসন্ধানের আকাঙ্ক্ষা জাগ্রত হয় । ii) এই পদ্ধতির মাধ্যমে শিখন দীর্ঘস্থায়ী হয় । iii) শিক্ষার্থীদের অনুপ্রাণিত করতে, ভাবতে এবং বিভিন্ন বিষয়ের মধ্যে অনুষঙ্গ স্থাপনে এই পদ্ধতি কার্যকর । iv) পাঠ্যবিষয় মুখস্তের পরিবর্তে হাতে কলমে শিখন সম্পাদন করতে পারে । v) পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি শিক্ষার্থীদের দেহ ও মনে সক্রিয়তা গড়ে তোলে ফলে পাঠগ্রহণের আকর্ষণ বৃদ্ধি পায় । vi) শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনুমান দক্ষতা, পার্থক্যকরণ, মিল, ব্যবহারিক উপযোগীতা ইত্যাদি বোধের বিকাশ ঘটে ।

পরিবেশবিদ্যা শিক্ষার সম্পদ ও উপকরণ

1. শিক্ষণ উপকরণ বলতে কি বোঝায় ? 
উঃ যে সমস্ত সামগ্রীর মাধ্যমে শিক্ষণীয় বিষয়কে প্রাঞ্জল ও অধিক মনোযোগী হিসাবে কার্যকরী ভাবে উপস্থাপন করা হয় সেগুলোকে শিক্ষণ উপকরণ বলা হয় । অন্যভাবে বলা যায়, 'শ্রেণিকক্ষ বা শ্রেণিকক্ষের বাইরে শিখন প্রক্রিয়াকে সহজ, জীবন্ত ও আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য যেসব সামগ্রী শিখন মাধ্যম হিসাবে ব্যবহার করা হয় সেইসব সামগ্রীকে শিক্ষণ উপকরণ বলা হয় ।' এরুপ উপকরণের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের কল্পনা ও বাস্তবের সমন্বয়সাধন করা সম্ভব হয় । 

2. শিক্ষণ উপকরণ এর প্রয়োজনীয়তা কি ? 
উঃ শিক্ষার্থীদের কাছে বিষয়কে সার্বিকভাবে গ্রহণযোগ্য করে তোলাই শিক্ষক/শিক্ষিকার কাছে বড়ো চ্যালেঞ্জ । শিক্ষাবিদদের মতে "We remember 20% of what we HEAR, We remember 30% of what we SEE, We remember 50% of what we SEE and HEAR, We remember 90% of what we SAY and DO." অর্থাৎ বোঝায় যায় কর্মের মধ্যে নিয়োজিত থেকে কোন বিষয়ে শিক্ষা গ্রহণ করা শিক্ষার্থীদের অধিক বোধগম্য হয় । আর শিক্ষার্থীদের কর্মের মধ্যে নিয়োজিত করে রাখতে সহায়তা করে শিক্ষণ উপকরণ । তাই বলা যায় সঠিক ও সদর্থকভাবে শিক্ষার্থীদের মধ্যে শিখন সঞ্চালনের জন্য শিক্ষণ উপকরণ প্রয়োজনীয় । 

3. শিক্ষণ উপকরণ এর সুবিধাগুলি কিকি ? 
উঃ "Aids are like arms for a soldier. Without good arms a soldier can not fight the battle successfully." অর্থাৎ শিক্ষণ উপকরণ ছাড়া শিক্ষণ কার্যাবলী সঠিকভাবে সম্পাদন মুশকিল । শিক্ষণ উপকরণ এর সুবিধাগুলি হলঃ i) ইহা শিক্ষার্থীদের বিষয়ের প্রতি আকর্ষিত করে অনুরাগ ও মনোযোগের শ্রীবৃদ্ধি ঘটায় । ii) জটিল ধারণা সহজভাবে উপস্থাপনে সহায়তা করে । iii) বিষয়ের আলোচনাকালে বিমূর্ত ধারণাকে মূর্ত করে তুলতে সহায়তা করে । iv) তত্ব-জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিভিন্ন দিকের সাথে সমন্বয় স্থাপনে সহায়তা করে । v) জ্ঞানের সঠিক প্রয়োগ এবং বিভিন্ন বিষয়ের অণুবন্ধ রচনাতে সহায়তা করে ইত্যাদি ।

4. শিক্ষণ উপকরণ ব্যবহারের কারণগুলি কিকি ? 
উঃ পরিবেশবিদ্যা শিক্ষণ শিক্ষার্থীদের পরিবেশকেন্দ্রিক মূল্যবোধ বিকাশের বিষয় । পরিবেশ সংক্রান্ত পাঠদান কালে শিক্ষক/শিক্ষিকা বিভিন্ন ধরনের শিক্ষণ-শিখন প্রদীপন ব্যবহার করে থাকেন, কারণ - i) পরিবেশ বিদ্যার জ্ঞান ও মূল্যবোধ জাগরণে বাস্তব দৃষ্টিভঙ্গি সম্পন্ন শিক্ষণ উপকরণ বেশ কার্যকর ভূমিকা পালন করে । ii) আদর্শ উপকরণের মাধ্যমে পরিবেশবিদ্যার বিষয়বস্তু আলোচনা করলে পাঠদান আকর্ষণীয় হয় ফলে তা শিক্ষার্থীদের কাছে জীবন্ত ও দীর্ঘস্থায়ী হয় । iii) শিক্ষণ-শিখন প্রদীপন ব্যবহার করে বিমূর্ত অনেক বিষয়ের প্রতিকল্প শিক্ষার্থীদের সামনে উপস্থাপন করা সম্ভব হয় ফলে সেই বিষয়ে শিক্ষার্থীদের পূর্ণাঙ্গ ধারণা গঠিত হয় । iv) পাঠ প্রক্রিয়ার সাথে সাথে আনুষঙ্গিক চিত্র, মডেল ইত্যাদি প্রদীপন ব্যবহার করলে শ্রেণিকক্ষে বাস্তব পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় ফলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে শিখন সঞ্চালনে দ্রুত সফলতা আসে । v) শ্রেণিকক্ষের একঘেয়েমিতা দুর হয় এবং শিশু শিক্ষার্থী তাদের আগ্রহ পুনর্জীবিত করতে সক্ষম হয় । 

5. প্রাথমিক স্তরে পরিবেশবিদ্যা শিখনের প্রধান শিক্ষণ উপকরণগুলি কিকি ? 
উঃ NIOS এর D.El.Ed কোর্স - 505 এ প্রাথমিক স্তরে পরিবেশবিদ্যা শিখনের প্রধান শিক্ষণ উপকরণগুলিকে ছয়টি বিভাগে বিভক্ত করে আলোচনা করা হয়েছে, যথাঃ i) সম্প্রদায় উপাদান, ii) সাংগঠনিক উপাদান, iii) প্রাকৃতিক উপাদান, iv) মিডিয়া, v) প্রযুক্তিগত উপাদান এবং vi) মনুষ্য সৃষ্ট উপাদান । 

6. পরিবেশবিদ্যা শিখনের সম্প্রদায় উপাদান বলতে কি বোঝায় ? 
উঃ শিশু শিক্ষার্থী প্রাথমিকভাবে তার পরিবেশ সংক্রান্ত শিক্ষা নিজের পার্শবর্তী পরিবার পরিজন, গোষ্ঠী, পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন কর্মকেন্দ্র, সামাজিক ভৌগোলিক পরিবেশ ইত্যাদি থেকে অর্জন করে । পরিবেশ শিক্ষায় সম্প্রদায়গত উপাদান বলতে বোঝায় শিক্ষার্থীদের নিজস্ব পরিবেশে নিবাসী বিভিন্ন অর্থ-সামাজিক কার্যাবলীতে অংশগ্রহনকারী মানব গোষ্ঠীকে । এরুপ উপাদান থেকে শিক্ষার্থী তাদের কার্যাবলী এবং তার মর্যাদা সম্পর্কে ধারণা গঠন করতে সক্ষম হয় । যেমনঃ একজন কৃষক পরিবেশের ক্ষেত্রে কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা শিক্ষার্থী জানতে পারে কারণ তারা দেখে আসে কৃষক ফসল উৎপাদন করে এবং তা থেকে আমরা খাদ্য সংগ্রহ করি । 

7. প্রাথমিক স্তরে পরিবেশবিদ্যা শিখনের সম্প্রদায় উপাদানের উদাহরণ দিন । 
উঃ NIOS এর D.El.Ed কোর্স - 505 এ প্রাথমিক স্তরে পরিবেশবিদ্যা শিখনের সম্প্রদায় উপাদানের উদাহরণ হিসাবে ছুতোর, দোকানী, পিতামাতা, শিক্ষক ইত্যাদির কথা বলা হয়েছে । 

8. পরিবেশবিদ্যা শিখনের সাংগঠনিক উপাদান বলতে কি বোঝায় ? 
উঃ সংগঠন বলতে বোঝায় কোন বিশেষ কার্যাবলী সম্পাদনের জন্য বিভিন্ন দক্ষতা সম্পন্ন মানুষের একত্রিত প্রতিষ্ঠানকে বোঝায় । শিক্ষার্থী যে সমস্ত সংগঠন থেকে পরিবেশকেন্দ্রিক বিভিন্ন ধারণা অর্জন করতে সমর্থ হয় সেগুলিকে পরিবেশবিদ্যা শিখনের সাংগঠনিক উপাদান বলা হয় । প্রাথমিক স্তরে পরিবেশবিদ্যা শিক্ষাকালে শিক্ষার্থী এই সমস্ত সাংগঠনিক উপাদানের মাধ্যমে সংগঠনের কার্যাবলী দেখে কাজের মূল্যবোধ, সংগঠনের গুরুত্ব, যৌথভাবে কার্য সম্পাদনের প্রকৃতি ও গুরুত্ব ইত্যাদি বিষয়গুলি সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে পারে । 

9. প্রাথমিক স্তরে পরিবেশবিদ্যা শিখনের সাংগঠনিক উপাদানের উদাহরণ দিন । 
উঃ NIOS এর D.El.Ed কোর্স - 505 এ প্রাথমিক স্তরে পরিবেশবিদ্যা শিখনের সাংগঠনিক উপাদানের উদাহরণ হিসাবে ব্যংক, হাসপাতাল, বিদ্যালয়, বিভিন্ন দপ্তর ইত্যাদির কথা উল্লেখ করা হয়েছে । 

10. প্রাথমিক স্তরে পরিবেশবিদ্যা শিখনের সাংগঠনিক উপাদানগুলিকে কয় ভাগে ভাগ করা হয়েছে ? 
উঃ প্রাথমিক স্তরে পরিবেশবিদ্যা শিখনের সাংগঠনিক উপাদানগুলিকে চার ভাগে ভাগ করা হয়েছে, যথাঃ i) জনসুযোগ-সুবিধা যুক্ত সংগঠন (Public Facilities Institution), ii) যাদুঘর এবং ঐতিহাসিক স্থান (Museums and Historical Sites), iii) বাণিজ্যিক ও শিল্প প্রতিষ্ঠান (Commercial and Industrial setups), iii) স্থানীয় মেলা (Local ‘Mela’/fairs) এবং iv) অন্যান্য প্রতিষ্ঠান (Other Establishments) ।

West Bengal GK পশ্চিম বঙ্গ জিকে Part -03

  * পশ্চিম বঙ্গের প্রথম রাজ্যপালের নাম কি? # রাজাগোপালাচারী চক্রবর্তী। * পশ্চিম বঙ্গের প্রথম মহিলা রাজ্যপালের নাম কি? # শ্রীমতী পদ্মাজা নাইড...