Tuesday, 4 August 2020

পরিবেশবিদ্যার আলোচনাক্ষেত্র

1. পরিবেশ (Environment) বলতে কি বোঝায় ? 
উঃ পরিবেশ বলতে বোঝায় আমাদের চারপাশের জৈব ও অজৈব ভৌতিক উপাদানগুলির পারস্পরিক মিথস্ক্রিয়ার ফলে উদ্ভুত প্রণালীকে । A. Panneerselvam এবং Mohana Ramakrishnan 1996 সালে প্রকাশিত তাদের "Environmental Science Education" নামক গ্রন্থে পরিবেশের সংজ্ঞা প্রসঙ্গে উল্লেখ করেন “Environment is anything immediately surrounding an object and exerting a direct influence on it." । ভারতীয় লেখক B. K. Sharma এবং H. Kaur তাদের "Environmental Chemistiy" (1997-98) নামক গ্রন্থে পরিবেশের সংজ্ঞা প্রসঙ্গে বলেন “Environment is the sum o f all social, economical, biological, physical or chemical factors, which constitute the surroundings of man, who is both creator and mouldier of his environment.” 

2. পরিবেশের উপাদান (Components) গুলি কিকি ?
উঃ পরিবেশ মূলতঃ তিনটি বৃহৎ উপাদানের সমন্বয়ে গঠিত, যথাঃ i) বায়ুমণ্ডল (Atmosphere), ii) বারিমণ্ডল (Hydrosphere) এবং iii) শিলামণ্ডল (Lithosphere) । 

3. পরিবেশ বিদ্যার উপাদান (Elements) গুলি কিকি ? 
উঃ Samuel Adegboyega University এর "Elements of Environmental Studies. In General Studies Compendium." গবেষণাপত্র অনুযায়ী পরিবেশ বিদ্যা বিষয়টি তিনটি উপাদানের সমন্বয়ে বিকশিত হয়েছে, যথাঃ i) প্রাকৃতিক উপাদান (Physical Elements), ii) জৈবিক উপাদান (Biological Elements) এবং iii) সাংস্কৃতিক উপাদান (Cultural Elements) । 

4. পরিবেশ বিদ্যার আলোচ্য প্রাকৃতিক উপাদানগুলি (Physical Elements) কিকি ? 
উঃ পরিবেশ বিদ্যার আলোচ্য প্রাকৃতিক উপাদানগুলি তথা মানুষের আবাসস্থল, সুযোগসুবিধা এবং সীমাবদ্ধতাগুলির পরিবর্তনশীল চরিত্র নির্ধারণকারী প্রভাবকগুলি হলঃ ক্ষেত্র (Space), ভূমিরুপ (Landforms), জলভাগ (Water Bodies), জলবায়ু (Climate), মৃত্তিকা (Soils), শিলা (Rocks) এবং খনিজ (Minerals) ।  

5. পরিবেশ বিদ্যার আলোচ্য জৈবিক উপাদান (Biological Elements) কিকি ?
উঃ পরিবেশ বিদ্যার আলোচ্য জৈবিক উপাদানগুলি হলঃ উদ্ভিদ (Plants), প্রাণী (Animals), অনুজীব (Microorganisms) এবং মনুষ্য সৃষ্ট জীবমণ্ডল (Man Constitute the Biosphere) ।


6. পরিবেশ বিদ্যার আলোচ্য সাংস্কৃতিক উপাদান (Cultural Elements) কিকি ?
উঃ পরিবেশ বিদ্যার আলোচ্য সাংস্কৃতিক উপাদানগুলি হলঃ মনুষ্য সৃষ্ট সামাজিক পরিবেশ গঠনের বিভিন্ন ব্যবস্থা যথাঃ অর্থনৈতিক (Conomic) অবস্থা, সামাজিক (Social) অবস্থা এবং (Political) অবস্থা । 

7. পরিবেশ বিদ্যায় কয় প্রকার পরিবেশের আলোচনা করা হয় ? 
উঃ পরিবেশ বিদ্যায় মূলতঃ তিন প্রকার পরিবেশের আলোচনা করা হয়, যথাঃ i) প্রাকৃতিক পরিবেশ (Physical Environment), ii) সামাজিক পরিবেশ (Social Environment) এবং iii) মনোবৈজ্ঞানিক পরিবেশ (Psychological Environment) । 

8. পরিবেশ বিদ্যায় আলোচিত প্রাকৃতিক পরিবেশ বলতে কি বোঝায় ? 
উঃ পরিবেশ বিদ্যায় আলোচিত প্রাকৃতিক পরিবেশ বলতে বোঝায়, কোন ভৌগোলিক ক্ষেত্রে জীবন বিকাশের প্রয়োজনীয় আনুষঙ্গিক উপাদান যথাঃ আবহাওয়া, জলবায়ু, ভূমিরূপ ইত্যাদি নানারুপ প্রাকৃতিক উপাদানের সমন্বিত অবস্থাকে । 

9. পরিবেশ বিদ্যায় আলোচিত সামাজিক পরিবেশ বলতে কি বোঝায় ? 
উঃ পরিবেশ বিদ্যায় আলোচিত সামাজিক পরিবেশ বলতে বোঝায়, মানুষ ও মনুষ্য সভ্যতার বিকাশের উপযোগী নৈতিক, সাংস্কৃতিক ও প্রাক্ষোভীক কার্যাবলীর প্রভাবে সৃষ্ট অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক পরিবেশের সমষ্টিগত অবস্থাকে । 

10. পরিবেশ বিদ্যায় আলোচিত মনোবৈজ্ঞানিক পরিবেশ বলতে কি বোঝায় ? 
উঃ মনোবৈজ্ঞানিক পরিবেশ মনোবৈজ্ঞানিক ব্যক্তিগত বা সমষ্টিগত ব্যক্তিত্ব এবং তার প্রভাবে উদ্ভুত পরিবেশ সমন্ধে বুঝতে আমাদের সক্ষম করে । অর্থাৎ উপরোক্ত প্রাকৃতিক ও সামাজিক পরিবেশের বিকাশে মানবীয় দৃষ্টিভঙ্গি, পরিকল্পনা, কৌশল ইত্যাদির সম্মিলিত অবস্থার ফলে উদ্ভুত পরিবেশকে মনোবৈজ্ঞানিক পরিবেশ বলা যায় । যেমনঃ বিদ্যালয়ের মনোবৈজ্ঞানিক পরিবেশ এবং কোন প্রতিষ্ঠানের কার্যনির্বাহী দপ্তরের মনোবৈজ্ঞানিক পরিবেশ সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র ।

স্বাধীনতা পূর্ববর্তী ভারতীয় শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়ন পর্যায় (Pre-Independence Indian Education System)

1. উডের ড্যাসপ্যাচে শিক্ষার জন্য ভাষার ক্রমরুপ বিকাশের সুপারিশটি কিরকম ছিল ? 
উঃ উডের ড্যাসপ্যাচে ভাষা হিসাবে প্রাথমিক স্তরে আঞ্চলিক ভাষাকে, মাধ্যমিক স্তরে অ্যাংলো-আঞ্চলিক ভাষা এবং মহাবিদ্যালয় স্তরে ইংরাজি ভাষাকে গ্রহণ করে শিক্ষা ব্যবস্থা বিকাশের সুপারিশ করা হয় । 

2. উডের ড্যাসপ্যাচে ভারতীয় শিক্ষাব্যবস্থার বিকাশে যেসমস্ত পদক্ষেপ নেওয়া হয় সেগুলো কিকি ? 
উঃ উডের ড্যাসপ্যাচে ভারতীয় শিক্ষাব্যবস্থার বিকাশে যেসমস্ত পদক্ষেপ নেওয়া হয় সেগুলো হলঃ i. ভারতের প্রত্যেকটি প্রদেশে শিক্ষা বিভাগ (Education Department) গড়ে তোলার উপর জোর দেওয়া হয় । ii. লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের আদলে ভারতের বৃহৎ শহরগুলোতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয় । iii. প্রত্যেক জেলায় অন্ততঃ একটি সরকারি বিদ্যালয় স্থাপনের কথা উল্লেখ করা হয় । iv. ভারতীয়দের স্থানীয় ভাষায় প্রশিক্ষণের উপর জোর দেওয়ার কথা বলা হয় । v. প্রথমিক স্তর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় স্তর পর্যন্ত সুনিয়ন্ত্রিত শিখন ব্যবস্থার প্রবর্তনের কথা বলা হয় । vi. অনুমোদিত বেসরকারী স্কুলগুলিকে সহায়তার জন্য অনুদান দেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয় । vii. সরকারকে নারী শিক্ষার প্রসারে গুরুত্ব দিতে বলা হয় ইত্যাদি । 

3. উডের ড্যাসপ্যাচ অনুযায়ী ভারতে কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের সূচনা হয় ? 
উঃ উডের ড্যাসপ্যাচ অনুযায়ী ভারতে 1857 সালে কলকাতা, মুম্বাই এবং মাদ্রাস বিশ্ববিদ্যালয়, 1882 তে পঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয় এবং 1887 তে এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের সূচনা হয় । 

4. উডের ড্যাসপ্যাচ অনুযায়ী ভারতীয় শিক্ষাব্যবস্থায় প্রবর্তিত অনুদান - সহায়তা ব্যবস্থার (Grant - in-aid system) শর্তগুলি কিকি ছিল ? 
উঃ উডের ড্যাসপ্যাচ অনুযায়ী ভারতীয় শিক্ষাব্যবস্থায় প্রবর্তিত অনুদান - সহায়তা ব্যবস্থার শর্তগুলি হলঃ i. স্কুলগুলি অবশ্যই ধর্মনিরপেক্ষ শিক্ষা প্রদান করবে। ii. স্কুল কর্তৃপক্ষ/পরিচালককে স্কুলটি ভালভাবে চালাতে হবে । iii. সময়ে সময়ে রাজ্য পরিদর্শন করতে বিদ্যালয়কে সম্মতি দিতে হবে । iv. অনুদান নিয়ন্ত্রণের জন্য বিদ্যালয়কে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত যে কোনও বিধি অনুসরণ করতে হবে । v. বিদ্যালয়কে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ফি নিতে হবে ইত্যাদি ।


5. উডের ড্যাসপ্যাচ অনুযায়ী শিক্ষা নীতির লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য গুলি কিকি ছিল ? 
উঃ ডেসপ্যাচ প্রথমে ভারতে কোম্পানির শিক্ষানীতিটির লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য সম্পর্কে আলোকপাত করে। এটি কোম্পানির অন্যান্য দায়িত্ব অপেক্ষা ভারতীয় শিক্ষার সংস্থার সামগ্রিক দায়িত্বকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার প্রদান করে । ডেসপ্যাচের উল্লেখযোগ্য লক্ষ্যগুলি হলঃ i. ভারতীয়দের কাছে পশ্চিমা জ্ঞান, পশ্চিমা সংস্কৃতি সম্পর্কিত তথ্য সরবরাহ করা। ii. ভারতের স্থানীয়দেরকে শিক্ষিত করা যাতে এক শ্রেণির সরকারী কর্মচারী তৈরি করা যায়। iii. বৌদ্ধিক বিকাশ এবং তরুণ প্রজন্মের নৈতিক চরিত্রকে উত্থাপন করা। iv. ভারতীয় জনগণের ব্যবহারিক এবং বৃত্তিমূলক দক্ষতা বিকাশ করা যাতে আরও বেশি বেশি নিবন্ধ (Articles) রচনা করা যায় এবং সেই পণ্যগুলির ব্যবহারের জন্য একটি ভাল বাজার তৈরি করা যায়।

6. ভারতে নিযুক্ত প্রথম শিক্ষা কমিশন (Indian Education Commission) এর নাম কি ? 
উঃ ভারতে নিযুক্ত প্রথম শিক্ষা কমিশন হলঃ Hunter Commission (1882-83)

7. কে কখন হান্টার কমিশন নিয়োগ করেন ? 
উঃ Sir Willium Hunter এর নেতৃত্বে এবং আরো 20 জন প্রতিনিধি সহ একটি গঠিত কমিশন Lord Ripon 1882 সালের 3রা ফেব্রুয়ারি তে নিয়োগ করেন যা হান্টার কমিশন নামে পরিচিত । 

8. হান্টার কমিশনে কোন কোন ভারতীয় প্রতিনিধি ছিলেন ? 
উঃ হান্টার কমিশনে ভারতীয় প্রতিনিধি হিসাবে ছিলেন সৈয়দ মাহমুদ, ভূদেব মুখার্জী, আনন্দ মোহন ঘোষ এবং কাশীনাথ ত্রিম্বক তেলং । 

9. হান্টার কমিশনের মূল লক্ষ্য কি ছিল ? 
উঃ হান্টার কমিশনের মূল লক্ষ্য ছিল উডের ডেসপাচের সুপারিশগুলি কতটা বাস্তবায়িত হয়েছে তার মূল্যায়ন করা।

10. হান্টার কমিশন তার মূল লক্ষ্য পূরণের জন্য কোন বিষয়ে তদন্ত করে ? 
উঃ কমিশন তার মূল লক্ষ্য পূরণের জন্য নিম্নলিখিত তদন্তগুলি পরিচালনা করে, যথাঃ i. প্রাথমিক শিক্ষার অবস্থান। ii. রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের অবস্থান। iii. মাধ্যমিক শিক্ষার অবস্থান । iv. শিক্ষা ক্ষেত্রে মিশনারিদের কাজ । এবং v. বেসরকারী উদ্যোগের প্রতি সরকারের মনোভাব ইত্যাদি ।

পরিবেশ বিদ্যা শিক্ষণ পদ্ধতি

1. শিক্ষণ পদ্ধতি বলতে কি বোঝায় ? 
উঃ শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা আকর্ষণীয় করতে এবং সহজেই হৃদয়ঙ্গম করানোর জন্য পাঠক্রমের উপাদানগুলিকে বেছে নিয়ে সুসজ্জিতভাবে উপস্থাপনের জন্য শিক্ষকদের ব্যবহৃত নীতি ও পদ্ধতিগুলিকে শিক্ষণ পদ্ধতি বলা হয় । অন্যভাবে বলা যায় শিক্ষণীয় বিষয়কে সহজ ও যথার্থভাবে শিক্ষার্থীদের কাছে উপস্থাপনের জন্য শিক্ষাকার্যের সঙ্গে স্থান-কাল-পাত্রের সামঞ্জস্যবিধান করে কোন পদ্ধতির প্রয়োগই হল শিক্ষণ পদ্ধতি । কোন একটি পদ্ধতির উপযোগীতা নির্ভর করে কে, কীভাবে, কাদের উপর, কী উদ্দেশ্যে সেই পদ্ধতির প্রয়োগ করবে তার উপর । 
 
2. পরিবেশবিদ্যা শিখনে পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ কোন কোন পদ্ধতি ব্যবহারের কথা বলে ? 
উঃ পরিবেশবিদ্যা শিখনে পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ i) গল্প বলা পদ্ধতি, ii) পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি, iii) আলোচনা পদ্ধতি, iv) নাটকীয় বা অভিনয় পদ্ধতি, v) আবিষ্কার পদ্ধতি, vi) ক্ষেত্র সমীক্ষা পদ্ধতি, vii) প্রতিপাদন পদ্ধতি, viii) সমস্যা সমাধান পদ্ধতি, ix) প্রকল্প পদ্ধতি অনুসরণের কথা বলেছেন । 

3. পরিবেশবিদ্যা শিখনে গল্প বলা পদ্ধতি (Story-Telling Method) বলতে কি বোঝায় ? 
উঃ প্রাথমিক স্তরের শিশু শিক্ষার্থী মূলত নরম মনের হয়ে থাকে । শিক্ষার বিষয়গুলি তাদের কাছে বিস্ময় । তাত্বিক বা বাগ্ময় আলোচনা এদের কাছে বোঝা তাই ছোট ছোট কথার মাধ্যমে গল্পের ছলে কোন বিষয়কে উপস্থাপন করলে শিক্ষার্থী বিষয়ের প্রতি আকৃষ্ট হয় । শিশু শিক্ষায় গল্প বলা পদ্ধতি বলতে বোঝায় গল্পের মাধ্যমে রোমাঞ্চকর ও কৌতূহলী পরিবেশ সৃষ্টি করে চিত্তাকর্ষকভাবে বিষয়বস্তুর উপস্থাপন । 

4. প্রাথমিক স্তরের কোন শ্রেণির জন্য গল্প বলা পদ্ধতি অনুসরণ আদর্শ ? 
উঃ প্রাথমিক স্তরের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির জন্য গল্প বলা পদ্ধতি অনুসরণ আদর্শ, তবে অন্যান্য শ্রেণিগুলিতেও এই পদ্ধতি অনুসরণ করা যায় । এই স্তরের শিক্ষার্থীরা স্বাভাবিকভাবেই গল্পের প্রতি আকৃষ্ট হয় ফলে শিখন সঞ্চালন সহজ হয় । 

5. প্রাথমিক স্তরে কোন কোন বিষয়কেন্দ্রিক গল্প বিশেষ উপযোগী ? 
উঃ প্রাথমিক স্তরে ঐতিহাসিক, জীবনীমূলক, বীরত্ব গাঁথা, যুদ্ধ, পারিবারিক উৎসব, আনন্দ মূলক, ভ্রমণমূলকখেলাধুলা সংক্রান্ত, খাদ্য ও অভ্যাস ইত্যাদি বিষয়কেন্দ্রিক গল্প বিশেষ উপযোগী । 


6. প্রাথমিক স্তরে গল্প বলা পদ্ধতি অনুসরণের সুবিধাগুলি কিকি ? 
উঃ প্রাথমিক স্তরে গল্প বলা পদ্ধতি অনুসরণের সুবিধাগুলি হলঃ i) গল্প বলা পদ্ধতি সহজেই শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করে । ii) গল্প পদ্ধতির মাধ্যমে নির্দিষ্ট সময়ে অধিক সংখ্যক শিক্ষার্থীদের কার্যকরভাবে শিক্ষাদান সম্ভব হয় । iii) শিক্ষক/শিক্ষিকার কল্পনা শক্তিতে গল্পের মাধ্যমে উপস্থাপিত পাঠ্য বিষয়বস্তু শিক্ষার্থীদের কাছে আকর্ষক পরিবেশ তৈরি করে ফলে অবচেতন মনে সহজেই বিষয়গুলি সঞ্চালিত হয় । iv) গল্প বলতে বলতেই শিক্ষক/শিক্ষিকা প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সুবিধা, অসুবিধা, বোধগম্যতা ইত্যাদি বিষয়গুলি সম্পর্কে ধারণা গঠন করতে পারে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সক্ষম হন । v) এই পদ্ধতির মাধ্যমে বিস্তর, জটিল ও গুরুগম্ভীর বিষয়কেও সহজ-সরল ও ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য ভাবে উপস্থাপন করা সম্ভব হয় । 

7. প্রাথমিক স্তরে গল্প বলা পদ্ধতি অনুসরণের অসুবিধাগুলি কিকি ?
উঃ প্রাথমিক স্তরে গল্প বলা পদ্ধতি অনুসরণের অসুবিধাগুলি হলঃ i) প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থী সাধারণত চঞ্চল প্রকৃতির হওয়ায় অনেকসময় গল্প শোনার ধৈর্য হারিয়ে ফেলে আবার শিক্ষক/শিক্ষিকা সকল শিক্ষার্থীর দিকে সমান লক্ষ্য রাখতেও পারে না ফলে অনেকসময় গল্প শিক্ষার্থীদের কাছে গুরুত্বহীন হয়ে ওঠে । ii) পাঠ্য পুস্তকের সমস্ত বিষয়কে গল্পের মাধ্যমে উপস্থাপন করা সম্ভব হয় না । iii) গল্প পদ্ধতির বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় সময়ের অভাব অনেক সময় পদ্ধতির সার্থক প্রয়োগকে খর্ব করে । iv) এই পদ্ধতিতে পাঠদানে মেধাবী শিক্ষার্থী তাদের বুদ্ধি খাটানোর সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয় । v) গল্প পদ্ধতিতে শিক্ষার্থী অধিক মাত্রায় শিক্ষক/শিক্ষিকা নির্ভরশীল হওয়ায় স্বাধীনভাবে বিষয় অনুশীলনের ক্ষমতা খর্ব হয় । 

8. পরিবেশবিদ্যা শিখনে পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি (Observation Method) বলতে কি বোঝায় ? 
উঃ যেকোনো বিষয়ে আদর্শ জ্ঞানলাভের উপায় হল তথ্য ও ঘটনাবলী পর্যবেক্ষণ করা । পরিবেশবিদ্যা জ্ঞানের বিকাশের জন্য শিক্ষার্থী নিজে উপস্থিত থেকে যখন শিক্ষকের সহায়তায় কোন বিষয়কে অবলোকন করে সেই বিষয় সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে তখন তাকে পর্যবেক্ষণ পদ্ধতিতে শিখন বলে । শিক্ষার্থীর স্বাভাবিক কৌতুহলতার চরিত্রকে কাজে লাগিয়ে শিক্ষক এভাবে কার্যকরী পাঠদানে তাদের উদ্বুদ্ধ করে থাকেন । 

9. পরিবেশবিদ্যা শিখনে পর্যবেক্ষণ পদ্ধতির মাধ্যমে শিক্ষণ কোন কোন বিষয়ে শিক্ষার্থীদের জ্ঞান আহরণে সহায়তা করে ? 
উঃ পরিবেশবিদ্যা শিখনে পর্যবেক্ষণ পদ্ধতির মাধ্যমে প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থী পরিবেশের বিভিন্ন সজীব ও নির্জীব উপাদান সমন্ধে জ্ঞান অর্জন করতে পারে । বিভিন্ন বিষয় যথা - উদ্ভিদ, প্রাণী, ফল, ফুল, শাকসবজি, আবাসস্থল, যানবাহন ইত্যাদির নাম জানতে পারে । পারিবারিক সম্পর্ক, পোশাকের ব্যবহারের সময়কাল ও বিভিন্ন পেশার সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির পোশাক, বিভিন্ন রঙ সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে সক্ষম হয় । 

10. পরিবেশবিদ্যা শিখনে পর্যবেক্ষণ পদ্ধতির সুবিধাগুলি কিকি ? 
উঃ পরিবেশবিদ্যা শিখনে পর্যবেক্ষণ পদ্ধতির সুবিধাগুলি হলঃ i) পর্যবেক্ষণ পদ্ধতিতে শিশু শিক্ষার্থীদের মনে পরিবেশ অনুসন্ধানের আকাঙ্ক্ষা জাগ্রত হয় । ii) এই পদ্ধতির মাধ্যমে শিখন দীর্ঘস্থায়ী হয় । iii) শিক্ষার্থীদের অনুপ্রাণিত করতে, ভাবতে এবং বিভিন্ন বিষয়ের মধ্যে অনুষঙ্গ স্থাপনে এই পদ্ধতি কার্যকর । iv) পাঠ্যবিষয় মুখস্তের পরিবর্তে হাতে কলমে শিখন সম্পাদন করতে পারে । v) পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি শিক্ষার্থীদের দেহ ও মনে সক্রিয়তা গড়ে তোলে ফলে পাঠগ্রহণের আকর্ষণ বৃদ্ধি পায় । vi) শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনুমান দক্ষতা, পার্থক্যকরণ, মিল, ব্যবহারিক উপযোগীতা ইত্যাদি বোধের বিকাশ ঘটে ।

পরিবেশবিদ্যা শিক্ষার সম্পদ ও উপকরণ

1. শিক্ষণ উপকরণ বলতে কি বোঝায় ? 
উঃ যে সমস্ত সামগ্রীর মাধ্যমে শিক্ষণীয় বিষয়কে প্রাঞ্জল ও অধিক মনোযোগী হিসাবে কার্যকরী ভাবে উপস্থাপন করা হয় সেগুলোকে শিক্ষণ উপকরণ বলা হয় । অন্যভাবে বলা যায়, 'শ্রেণিকক্ষ বা শ্রেণিকক্ষের বাইরে শিখন প্রক্রিয়াকে সহজ, জীবন্ত ও আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য যেসব সামগ্রী শিখন মাধ্যম হিসাবে ব্যবহার করা হয় সেইসব সামগ্রীকে শিক্ষণ উপকরণ বলা হয় ।' এরুপ উপকরণের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের কল্পনা ও বাস্তবের সমন্বয়সাধন করা সম্ভব হয় । 

2. শিক্ষণ উপকরণ এর প্রয়োজনীয়তা কি ? 
উঃ শিক্ষার্থীদের কাছে বিষয়কে সার্বিকভাবে গ্রহণযোগ্য করে তোলাই শিক্ষক/শিক্ষিকার কাছে বড়ো চ্যালেঞ্জ । শিক্ষাবিদদের মতে "We remember 20% of what we HEAR, We remember 30% of what we SEE, We remember 50% of what we SEE and HEAR, We remember 90% of what we SAY and DO." অর্থাৎ বোঝায় যায় কর্মের মধ্যে নিয়োজিত থেকে কোন বিষয়ে শিক্ষা গ্রহণ করা শিক্ষার্থীদের অধিক বোধগম্য হয় । আর শিক্ষার্থীদের কর্মের মধ্যে নিয়োজিত করে রাখতে সহায়তা করে শিক্ষণ উপকরণ । তাই বলা যায় সঠিক ও সদর্থকভাবে শিক্ষার্থীদের মধ্যে শিখন সঞ্চালনের জন্য শিক্ষণ উপকরণ প্রয়োজনীয় । 

3. শিক্ষণ উপকরণ এর সুবিধাগুলি কিকি ? 
উঃ "Aids are like arms for a soldier. Without good arms a soldier can not fight the battle successfully." অর্থাৎ শিক্ষণ উপকরণ ছাড়া শিক্ষণ কার্যাবলী সঠিকভাবে সম্পাদন মুশকিল । শিক্ষণ উপকরণ এর সুবিধাগুলি হলঃ i) ইহা শিক্ষার্থীদের বিষয়ের প্রতি আকর্ষিত করে অনুরাগ ও মনোযোগের শ্রীবৃদ্ধি ঘটায় । ii) জটিল ধারণা সহজভাবে উপস্থাপনে সহায়তা করে । iii) বিষয়ের আলোচনাকালে বিমূর্ত ধারণাকে মূর্ত করে তুলতে সহায়তা করে । iv) তত্ব-জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিভিন্ন দিকের সাথে সমন্বয় স্থাপনে সহায়তা করে । v) জ্ঞানের সঠিক প্রয়োগ এবং বিভিন্ন বিষয়ের অণুবন্ধ রচনাতে সহায়তা করে ইত্যাদি ।

4. শিক্ষণ উপকরণ ব্যবহারের কারণগুলি কিকি ? 
উঃ পরিবেশবিদ্যা শিক্ষণ শিক্ষার্থীদের পরিবেশকেন্দ্রিক মূল্যবোধ বিকাশের বিষয় । পরিবেশ সংক্রান্ত পাঠদান কালে শিক্ষক/শিক্ষিকা বিভিন্ন ধরনের শিক্ষণ-শিখন প্রদীপন ব্যবহার করে থাকেন, কারণ - i) পরিবেশ বিদ্যার জ্ঞান ও মূল্যবোধ জাগরণে বাস্তব দৃষ্টিভঙ্গি সম্পন্ন শিক্ষণ উপকরণ বেশ কার্যকর ভূমিকা পালন করে । ii) আদর্শ উপকরণের মাধ্যমে পরিবেশবিদ্যার বিষয়বস্তু আলোচনা করলে পাঠদান আকর্ষণীয় হয় ফলে তা শিক্ষার্থীদের কাছে জীবন্ত ও দীর্ঘস্থায়ী হয় । iii) শিক্ষণ-শিখন প্রদীপন ব্যবহার করে বিমূর্ত অনেক বিষয়ের প্রতিকল্প শিক্ষার্থীদের সামনে উপস্থাপন করা সম্ভব হয় ফলে সেই বিষয়ে শিক্ষার্থীদের পূর্ণাঙ্গ ধারণা গঠিত হয় । iv) পাঠ প্রক্রিয়ার সাথে সাথে আনুষঙ্গিক চিত্র, মডেল ইত্যাদি প্রদীপন ব্যবহার করলে শ্রেণিকক্ষে বাস্তব পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় ফলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে শিখন সঞ্চালনে দ্রুত সফলতা আসে । v) শ্রেণিকক্ষের একঘেয়েমিতা দুর হয় এবং শিশু শিক্ষার্থী তাদের আগ্রহ পুনর্জীবিত করতে সক্ষম হয় । 

5. প্রাথমিক স্তরে পরিবেশবিদ্যা শিখনের প্রধান শিক্ষণ উপকরণগুলি কিকি ? 
উঃ NIOS এর D.El.Ed কোর্স - 505 এ প্রাথমিক স্তরে পরিবেশবিদ্যা শিখনের প্রধান শিক্ষণ উপকরণগুলিকে ছয়টি বিভাগে বিভক্ত করে আলোচনা করা হয়েছে, যথাঃ i) সম্প্রদায় উপাদান, ii) সাংগঠনিক উপাদান, iii) প্রাকৃতিক উপাদান, iv) মিডিয়া, v) প্রযুক্তিগত উপাদান এবং vi) মনুষ্য সৃষ্ট উপাদান । 

6. পরিবেশবিদ্যা শিখনের সম্প্রদায় উপাদান বলতে কি বোঝায় ? 
উঃ শিশু শিক্ষার্থী প্রাথমিকভাবে তার পরিবেশ সংক্রান্ত শিক্ষা নিজের পার্শবর্তী পরিবার পরিজন, গোষ্ঠী, পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন কর্মকেন্দ্র, সামাজিক ভৌগোলিক পরিবেশ ইত্যাদি থেকে অর্জন করে । পরিবেশ শিক্ষায় সম্প্রদায়গত উপাদান বলতে বোঝায় শিক্ষার্থীদের নিজস্ব পরিবেশে নিবাসী বিভিন্ন অর্থ-সামাজিক কার্যাবলীতে অংশগ্রহনকারী মানব গোষ্ঠীকে । এরুপ উপাদান থেকে শিক্ষার্থী তাদের কার্যাবলী এবং তার মর্যাদা সম্পর্কে ধারণা গঠন করতে সক্ষম হয় । যেমনঃ একজন কৃষক পরিবেশের ক্ষেত্রে কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা শিক্ষার্থী জানতে পারে কারণ তারা দেখে আসে কৃষক ফসল উৎপাদন করে এবং তা থেকে আমরা খাদ্য সংগ্রহ করি । 

7. প্রাথমিক স্তরে পরিবেশবিদ্যা শিখনের সম্প্রদায় উপাদানের উদাহরণ দিন । 
উঃ NIOS এর D.El.Ed কোর্স - 505 এ প্রাথমিক স্তরে পরিবেশবিদ্যা শিখনের সম্প্রদায় উপাদানের উদাহরণ হিসাবে ছুতোর, দোকানী, পিতামাতা, শিক্ষক ইত্যাদির কথা বলা হয়েছে । 

8. পরিবেশবিদ্যা শিখনের সাংগঠনিক উপাদান বলতে কি বোঝায় ? 
উঃ সংগঠন বলতে বোঝায় কোন বিশেষ কার্যাবলী সম্পাদনের জন্য বিভিন্ন দক্ষতা সম্পন্ন মানুষের একত্রিত প্রতিষ্ঠানকে বোঝায় । শিক্ষার্থী যে সমস্ত সংগঠন থেকে পরিবেশকেন্দ্রিক বিভিন্ন ধারণা অর্জন করতে সমর্থ হয় সেগুলিকে পরিবেশবিদ্যা শিখনের সাংগঠনিক উপাদান বলা হয় । প্রাথমিক স্তরে পরিবেশবিদ্যা শিক্ষাকালে শিক্ষার্থী এই সমস্ত সাংগঠনিক উপাদানের মাধ্যমে সংগঠনের কার্যাবলী দেখে কাজের মূল্যবোধ, সংগঠনের গুরুত্ব, যৌথভাবে কার্য সম্পাদনের প্রকৃতি ও গুরুত্ব ইত্যাদি বিষয়গুলি সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে পারে । 

9. প্রাথমিক স্তরে পরিবেশবিদ্যা শিখনের সাংগঠনিক উপাদানের উদাহরণ দিন । 
উঃ NIOS এর D.El.Ed কোর্স - 505 এ প্রাথমিক স্তরে পরিবেশবিদ্যা শিখনের সাংগঠনিক উপাদানের উদাহরণ হিসাবে ব্যংক, হাসপাতাল, বিদ্যালয়, বিভিন্ন দপ্তর ইত্যাদির কথা উল্লেখ করা হয়েছে । 

10. প্রাথমিক স্তরে পরিবেশবিদ্যা শিখনের সাংগঠনিক উপাদানগুলিকে কয় ভাগে ভাগ করা হয়েছে ? 
উঃ প্রাথমিক স্তরে পরিবেশবিদ্যা শিখনের সাংগঠনিক উপাদানগুলিকে চার ভাগে ভাগ করা হয়েছে, যথাঃ i) জনসুযোগ-সুবিধা যুক্ত সংগঠন (Public Facilities Institution), ii) যাদুঘর এবং ঐতিহাসিক স্থান (Museums and Historical Sites), iii) বাণিজ্যিক ও শিল্প প্রতিষ্ঠান (Commercial and Industrial setups), iii) স্থানীয় মেলা (Local ‘Mela’/fairs) এবং iv) অন্যান্য প্রতিষ্ঠান (Other Establishments) ।

শিশু মনস্তাত্ত্বিক কিছু গ্রন্থ Part 4

46. "Teaching of social studies- a practical approach" লেখকঃ J.C. Aggarwal প্রথম প্রকাশিত হয় 1985 সালে । 

47. "Educational environment and student morale" লেখকঃ Rakesh Agnihotri প্রথম প্রকাশিত হয় 1989 সালে । 

48. "Value oriented education in India" লেখকঃ Ram Ahuja প্রথম প্রকাশিত হয় 2000 সালে ।  

49. "Teaching of history" লেখকঃ K.L. Arora প্রথম প্রকাশিত হয় 1983 সালে । 

50. "Commonsense and the curriculum" লেখকঃ Robin Barrow প্রথম প্রকাশিত হয় 1976 সালে । 

51. "Psychological foundations of education" লেখকঃ Srinibas Battacharya প্রথম প্রকাশিত হয় 2003 সালে । 

52. "Classical content analysis - a review" লেখকঃ Martin W. Bauer এবং George Gaskell প্রথম প্রকাশিত হয় 2000 সালে । 

53. "Child development" লেখকঃ Laura E. Berk প্রথম প্রকাশিত হয় 2003 সালে । 

54. "National policy on education" লেখকঃ Digumarti Bhaskara Rao প্রথম প্রকাশিত হয় 1996 সালে । 

55. "Towards value based education system" লেখকঃ R.K. Bhat প্রথম প্রকাশিত হয় 2000 সালে । 

56. "Teaching the social studies in secondary schools" লেখকঃ Arthur Cecil Bining, David Henry Bining প্রথম প্রকাশিত হয় 1935 সালে । 

57. "Reflective practices : writing and professional development" লেখকঃ Gillie Bolton প্রথম প্রকাশিত হয় 2001 সালে । 

58. "The challenges of educational leadership - values in a globalized age" লেখকঃ Mike Bottery প্রথম প্রকাশিত হয় 2004 সালে । 

59. "Educational measurement and evaluation" লেখকঃ Don F. Blood ও William C. Budd প্রথম প্রকাশিত হয় 1972 সালে । 

60. "The human values: a task for all" লেখকঃ  Mulk Raj Chilana ও Madan Lal Dewan প্রথম প্রকাশিত হয় 1998 সালে ।

জাতীয় শিক্ষা নীতি

1. জাতীয় শিক্ষা নীতি (National Police on Education) বলতে কি বোঝায় ? 
উঃ ভারতের জনগণের মধ্যে শিক্ষার প্রচার ও প্রসারের জন্য ভারত সরকার কর্তৃক প্রণীত শিক্ষা নীতিকে জাতীয় শিক্ষা নীতি বলা হয় । সময়ের সাথে সাথে এই নীতি পরিবর্তিত ও প্রসারিত হয়ে থাকে । 

2. ভারতে জাতীয় শিক্ষা নীতি গ্রহণের পূর্বে কোন কোন শিক্ষা কমিশন গঠিত হয় ? 
উঃ ভারতে জাতীয় শিক্ষা নীতি গ্রহণের পূর্বে ভারতীয় শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং আধুনিকীকরণের জন্য তিনটি কমিশন গঠিত হয়, যথাঃ 1948–1949 এর University Education Commission, 1952–1953 এর The Secondary Education Commission, 1964–66 এর The Kothari Commission .

3. স্বাধীনতা পূর্ব থেকে পরবর্তী সময়কালে ভারতীয় শিক্ষার উন্নয়নে গঠিত গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাকমিশন/প্রতিবেদন গুলি কিকি ? 
উঃ 1.স্বাধীনতা পূর্ব থেকে পরবর্তী সময়কালে ভারতীয় শিক্ষার উন্নয়নে গঠিত গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাকমিশন/প্রতিবেদন গুলি হলঃ i) The Indian Education Commission, or Hunter Commission -1882, ii) The Indian Universities Commission -1902, iii) The Calcutta University Commission - 1917-19, iv) The Hartog Committee - 1928-29. v) Abbot-Wood Committee - 1936-37, vi) Zakir Hussain/Wardha Committee on Basic Education - 1938, vii) The Sergeant Report - 1944, The University Education Commission/ Radhakrishnan Commission - 1948-49, viii) B. G. Kher Committee on Primary Education - 1951, ix) The Secondary Education Commission - 1952-53, x) Official Language Commission - 1956, xi) The university Grants Commission/ Kunzuru Committee Report. xii) The Education Commission/ Kothari Commission - 1964-66, xiv) Dr. Trigun Sen/ Higher Education Committee Report - 1967, xv) The Study Group Reports on the Teaching of English - 1967-71, xvi) National Policy on Education - 1986,  xvii) Archarya Ramamurti Commission - 1990

4. এখনো পর্যন্ত কয়টি শিক্ষানীতি গৃহীত হয়েছে ? 
উঃ এখনো পর্যন্ত চারটি শিক্ষানীতি গৃহীত হয়েছে, তার মধ্যে দুটি শিক্ষানীতি স্বতন্ত্র, একটি পরিমার্জিত এবং একটি খসড়া (Draft) অবস্থায় রয়েছে । *প্রসঙ্গত :- 29/07/2020 তে খসড়া (Draft) শিক্ষানীতিটি কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভায় স্বীকৃতি লাভ করে ।*

5. প্রথম জাতীয় শিক্ষা নীতি কখন গৃহীত হয় ? 
উঃ 1968 সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধী এবং শিক্ষামন্ত্রী ত্রিগুনা সেন এর সময়কালে ভারতের প্রথম জাতীয় শিক্ষা নীতি গৃহীত হয় । 

6. কোন কমিশনের রিপোর্টের ভিত্তিতে তৎকালীন ভারত সরকার প্রথম জাতীয় শিক্ষা নীতি প্রবর্তন করেন ? 
উঃ The Kothari Commission (1964–66) এর রিপোর্ট এবং সুপারিশের ভিত্তিতে তৎকালীন ভারত সরকার প্রথম জাতীয় শিক্ষা নীতি প্রবর্তন করেন । 

7. প্রথম জাতীয় শিক্ষা নীতির জন্য কখন খসড়া কমিটি গঠিত হয় ? 
উঃ প্রথম জাতীয় শিক্ষা নীতির জন্য ভারত সরকার 1967 সালের 5 ই এপ্রিল 'The Committee of Members of Parliament on Education' নামক 30 সদস্যের খসড়া কমিটি গঠিত হয় । 

8. প্রথম জাতীয় শিক্ষা নীতি অন্য কি নামে পরিচিত ? 
উঃ প্রথম জাতীয় শিক্ষা নীতি "National School System" নামেও পরিচিত । 

9. প্রথম জাতীয় শিক্ষা নীতিতে অনুসৃত গুরুত্বপূর্ণ নীতিগুলি কিকি ? 
উঃ প্রথম জাতীয় শিক্ষা নীতিতে অনুসৃত গুরুত্বপূর্ণ নীতিগুলি হলঃ i) বিনামূল্যে বাধ্যতামূলক শিক্ষার ব্যবস্থা (Free and Compulsory Education), ii) শিক্ষকদের মর্যাদা, সক্ষমতা ও শিক্ষা সুনিশ্চিত করা (Status, Emulations and Education of Teachers), iii) ভাষার বিকাশ (Language Development), iv) সবার জন্য শিক্ষার সুযোগ তৈরি (Education Opportunity for all), v) সময় সময় অগ্রগতি পর্যালোচনা (To review the progress), vi) সংস্কৃত ভাষার উন্নতি সাধন করা (Development of Sanskrit language), vii) ভারতের সম্মিলিত সংস্কৃতিতে প্রচারের মাধ্যম হিসাবে হিন্দি ভাষার গুরুত্ববৃদ্ধি (Promotion of Hindi as a medium of expression in the composite culture of India), viii) সারাদেশে শিক্ষার সাধারণ গ্রহণযোগ্য কাঠামোর বিকাশ (The acceptance of common structure of education throughout the country), ix) আন্তর্জাতিক ভাষা, বিশেষত ইংরেজী অধ্যয়নের উপর গুরুত্বআরোপ করা (Emphasis on the study of international language, especially English) ইত্যাদি । 

10. প্রথম জাতীয় শিক্ষা নীতির লক্ষ্যগুলি কিকি ছিল ? 
উঃ প্রথম জাতীয় শিক্ষা নীতির গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যগুলি ছিল - i) সকলের জন্য শিক্ষার ব্যবস্থা করা, ii) শিক্ষাব্যবস্থাকে বিজ্ঞানসম্মত করা এবং প্রযুক্তির উন্নয়ন ঘটানো, iii) সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক উন্নয়নের প্রগতি মসৃণ করা, iv) মানব সম্পদ উন্নয়নে গুরুত্বারোপ করা ইত্যাদি ।

শ্রেণিকক্ষ ব্যবস্থাপনা

1. শ্রেণিকক্ষ ব্যবস্থাপনা (Classroom Management) বলতে কি বোঝায় ? 
উঃ বৈচিত্রময় শ্রেণিকক্ষের শিক্ষার্থীদের সার্বিকভাবে সঠিক পথে পরিচালিত করার জন্য যে নিয়ম শৃঙ্খলার মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয়ের সমস্যার সমাধান করা হয় বা শিক্ষার্থীদের বিষয়ের প্রতি আকৃষ্ট করে নির্বিঘ্নে পাঠক্রম পরিচালনা করা হয় তাকে শ্রেণিকক্ষ ব্যবস্থাপনা বলে । অন্যভাবে বলা যায় একজন শিক্ষানবিশ শিক্ষার্থীদের সাফল্য ও শেখার উপযোগী শ্রেণিকক্ষের সুষ্ঠ পরিবেশ বজায় রাখতে যে পদ্ধতি এবং কৌশলগুলি ব্যবহার করে তাকেই শ্রেণিকক্ষ ব্যবস্থাপনা বলে । 

2. শ্রেণিকক্ষ ব্যবস্থাপনার মুল লক্ষ্য কি ? 
উঃ শ্রেণিকক্ষ ব্যবস্থাপনার মুল লক্ষ্য হলঃ i. একটি ইতিবাচক, উৎপাদনশীল শিক্ষার পরিবেশ তৈরি করা এবং বজায় রাখা। ও ii. একটি নিরাপদ শ্রেণীকক্ষ সম্প্রদায়ের সমর্থন এবং বিকাশ সাধন করা । 

3. শ্রেণিকক্ষ ব্যবস্থাপনার নীতিগুলি কিকি ? 
উঃ শ্রেণিকক্ষ ব্যবস্থাপনার উল্লেখযোগ্য নীতিগুলি হলঃ i. শ্রেণিকক্ষ পরিচালনার নিয়মাবলী তৈরি, ii. শ্রেণির কাজের জন্য সামাজিক আচরণ নির্ধারণ, iii. স্বতঃস্ফূর্ত শৃঙ্খলার বিকাশ, iv. নির্দিষ্ট কার্যাবলীর নিয়ম তৈরি, v. কার্যাবলীর ফল প্রদান, vi. আচরণের পরিবর্তন সাধন, vii. ধারাবাহিকতা বজায় রাখা ইত্যাদি । 

4. শ্রেণিকক্ষ ব্যবস্থাপনায় শিক্ষক/শিক্ষিকার ভূমিকা কি ? 
উঃ শ্রেণিকক্ষ ব্যবস্থাপনায় শিক্ষক/শিক্ষিকার ভূমিকাগুলি তিনটি পর্যায়ে বিভক্ত যথাঃ i. প্রাক-কার্যকালীন পর্যায়ের কাজ, ii. পাঠ আরম্ব করা ও সচল রাখা এবং iii. শ্রেণিকক্ষে ব্যবস্থাপনা বজায় রাখা । 

5. শ্রেণিকক্ষ ব্যবস্থাপনায় শিক্ষক/শিক্ষিকার প্রাক-কার্যকালীন পর্যায়ের কাজগুলি কিকি ? 
উঃ শ্রেণিকক্ষ ব্যবস্থাপনায় শিক্ষার্থীদের আচরণ নিয়ন্ত্রণের জন্য শিক্ষক/শিক্ষিকার প্রাক-কার্যকালীন পর্যায়ের কাজগুলি হলঃ i. বিদ্যালয়ে কার্যারম্ভ, ii. সামগ্রিক শ্রেণির কার্যাবলী নির্ণয়, iii. দলবদ্ধ কর্মসূচী নির্ধারণ, iv. দুটি কার্যাবলীর সমন্বয় সাধন, v. শ্রেণি কক্ষের বিন্যাস, vi. শ্রেণি উপকরণ ব্যবহারের পরিকল্পনা, vii. ব্যক্তি চাহিদার পরিকল্পনা, viii. শ্রেণির বাইরে কার্যাবলী নির্ণয় ইত্যাদি । 

6. শ্রেণিকক্ষ ব্যবস্থাপনায় শিক্ষক/শিক্ষিকার পাঠ আরম্ব করা ও সচল রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ দিক গুলি কিকি ? 
উঃ শ্রেণিকক্ষ ব্যবস্থাপনায় শিক্ষক/শিক্ষিকার পাঠ আরম্ব করা ও সচল রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ দিক গুলি হলঃ i. শ্রেণির কাজ সহজ থেকে জটিলের দিকে নিয়ে যেতে হবে । ii. শিক্ষারম্ভের প্রথম দিকে আকর্ষণীয় কাজ উপস্থাপন করতে হবে যাতে শিক্ষার্থী সফলতা অর্জন করতে পারে, ফলে সহযোগিতা বৃদ্ধি পাবে । এবং iii. শিক্ষক/শিক্ষিকা শিক্ষার্থীদের প্রতি প্রত্যক্ষ মনোযোগ রাখবেন যাতে তাদের আচরণের প্রতি দৃষ্টি রাখা সহজ হয় ইত্যাদি । 

7. শ্রেণিকক্ষ ব্যবস্থাপনায় শিক্ষক/শিক্ষিকার ব্যবস্থাপনা বজায় রাখার কৌশলগুলি কিকি ? 
উঃ শ্রেণিকক্ষ ব্যবস্থাপনায় শিক্ষক/শিক্ষিকা কিছু কৌশল ব্যবহার করে ব্যবস্থাপনাকে সুদৃঢ় করতে পারে, যথাঃ i. সচেতনভাবে প্রত্যেকটি শিক্ষার্থীর কার্যাবলীর উপর নজর রাখা যাতে তারা ঠিক ঠাক কার্য সম্পাদন করছে কি না তা বোঝা যায় । ii. অবাঞ্ছিত আচরণের রোধের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা । iii. প্রয়োজনে শাস্তি ও পুরষ্কারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা । iv. শিক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট তৈরির প্রতিটি পর্যায়ে নজর রাখা এবং প্রয়োজনীয় সমস্ত নির্দেশ প্রদান করা ইত্যাদি । 

8. শ্রেণিকক্ষ নিয়ন্ত্রণের নীতিগুলি কিকি ? 
উঃ বৈচিত্রময় শ্রেণিকক্ষ নিয়ন্ত্রণের জন্য কিছু নির্দিষ্ট নীতি অবলম্বন করা প্রয়োজন, এগুলি হলঃ i. গণতন্ত্রের নীতি, ii. স্বাধীনতার নীতি,  iii. শিক্ষার্থী কেন্দ্রিকতার নীতি, iv. নমনীয়তার নীতি, v. দ্বায়িত্ব বন্টনের নীতি, vi. নিরপেক্ষতার নীতি, vii. ন্যায়ের নীতি ইত্যাদি । 

9. শ্রেণিকক্ষ নিয়ন্ত্রণে গণতন্ত্রের নীতি বলতে কি বোঝায় ? 
উঃ শ্রেণিকক্ষ বৈচিত্রপূর্ণ শিক্ষার্থীদের দ্বারা পুষ্ট; এই বৈচিত্র মানসিক অবস্থা, বোধগম্যতা, বুদ্ধিমত্তা, সামাজিক প্রেক্ষাপট প্রভৃতির প্রভাবে গড়ে ওঠে । এরুপ বৈচিত্রময় শ্রেণিকক্ষে বিশৃঙ্খলা স্বাভাবিক তাই এই অবস্থা কাটিয়ে সঠিক পথে পাঠকার্য সম্পাদনের জন্য প্রয়োজন গণতান্ত্রিক অবস্থার বিকাশ । এর জন্য  শিক্ষক/শিক্ষিকাকে প্রতিটি শিক্ষার্থীর আচরণ সম্পর্কে অবহিত হয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং শিক্ষায় সম সুযোগ প্রবর্তন করে শিক্ষা দান করতে হবে । 

10. শ্রেণিকক্ষ নিয়ন্ত্রণে স্বাধীনতার নীতি বলতে কি বোঝায় ?
উঃ প্রত্যেকটি শিক্ষার্থীর নিজস্ব সৃজন ক্ষমতা থাকে যা তাকে অন্য শিক্ষার্থীর থেকে স্বতন্ত্রতা প্রদান করে । শিক্ষার্থীর এরুপ সৃজনশীলতার প্রকাশের উপযুক্ত পরিবেশ হলো ভয়মুক্ত ও স্বাধীন পরিবেশ । শিক্ষার্থীদের ক্ষমতার পূর্ণ বিকাশের জন্য প্রত্যেক শিক্ষক/শিক্ষিকাকে ভয়মুক্ত স্বাধীন শ্রেণিকক্ষ প্রদান করতে হবে যাতে সৃজনশীলতা প্রকাশিত হয় ।

West Bengal GK পশ্চিম বঙ্গ জিকে Part -03

  * পশ্চিম বঙ্গের প্রথম রাজ্যপালের নাম কি? # রাজাগোপালাচারী চক্রবর্তী। * পশ্চিম বঙ্গের প্রথম মহিলা রাজ্যপালের নাম কি? # শ্রীমতী পদ্মাজা নাইড...