1. মূল্যায়ন (Evaluation) বলতে কি বোঝায় ?
উঃ আভিধানিক অর্থে "মূল্যায়ন" বলতে বোঝায় "মূল্য আরোপের প্রক্রিয়া"। কোন ব্যক্তি, বস্তু বা বিষয়ের পরিমাণগত ও গুণগত মূল্য নির্ধারণের প্রক্রিয়াকে মূল্যায়ন বলা হয় । Targesson TT and Adoms এর মতে - To evaluate is to ascertain the values of some process or thing. Thus Educational evaluation is the passing of judgement on the degree of worth whitener of some teaching process or learning experience.”
মূল্যায়ন সম্পর্কে Kothari Commission এর অভিমতটি হলঃ "Evaluation is a continuous process, forms an integral part of total system of education and is intimately related to educational objectives. It exercises a great influence on the pupil’s study habits and teacher’s methods of instructions and thus helps not only to measure educational achievement but also to improve it.”
2. পরিবেশবিদ্যায় মূল্যায়নের লক্ষ্য কি ?
উঃ অন্যান্য বিষয়ের মতো পরিবেশবিদ্যা বিষয়েও শিক্ষার্থীর অগ্রগতি এবং পাঠপ্রক্রিয়ার যথার্থতা নির্ণয়ের জন্য মূল্যায়নের ব্যবস্থা করা হয় । পরিবেশবিদ্যা বিষয়ে শিক্ষার্থীদের লব্ধ জ্ঞান, তার মধ্যে গড়ে ওঠা পরিবেশ কেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি, পরিবেশের ঘটনাবলী উপলব্ধি করা, দৈনন্দিন জীবনের বাস্তবতার সঙ্গে অর্জিত জ্ঞানের সম্পর্ক স্থাপন ও সমস্যা সমাধানের চেষ্টা, সর্বোপরি মানুষ ও পরিবেশের পারস্পরিক সম্পর্ক নির্ণয়ের প্রচেষ্টা প্রভৃতি গুণাবলীর বিকাশ, প্রাত্যহিক এবং বাৎসরিক মূল্যায়ন পদ্ধতির মাধ্যমে পরিমাপ করা হয় ।
3. পরিবেশবিদ্যায় মূল্যায়নের বৈশিষ্ট্যগুলি কিকি ?
উঃ পরিবেশবিদ্যায় মূল্যায়নের বৈশিষ্ট্যগুলি হলঃ i) মূল্যায়নের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পরিবেশবিদ্যা শিখনের কাম্য সামর্থ্য ও পারদর্শিতা বিচার করা সম্ভব হয় । ii) পরিবেশবিদ্যা শিখনে ত্রুটি-বিচ্যুতি ও দুর্বলতা নির্ণয়ে মূল্যায়ন প্রক্রিয়ার সাহায্য নেওয়া হয় । iii) পরিবেশবিদ্যার একেকটি পাঠ এককের শিক্ষণ প্রক্রিয়া সমাপ্তির পর এক একটি এককের উপর মূল্যায়ন করা হয় । iv) পরিবেশবিদ্যা শিখনের মূল্যায়ন সর্বদা পরিবেশবিদ্যা শিখনের লক্ষ্য এবং শিক্ষার্থীর শিখনলব্ধ অভিজ্ঞতার সাথে সুসম্পর্ক রেখে অগ্রসর হয় । v) পরিবেশবিদ্যা শিখনের গুণগত মান নিয়ন্ত্রণ করে পরিবেশবিদ্যা শিক্ষণের মূল্যায়ন ।
4. পরিবেশবিদ্যা শিক্ষণের মূল্যায়ন ক্ষেত্রগুলি কিকি ?
উঃ পরিবেশবিদ্যা শিক্ষণের মূল্যায়ন ক্ষেত্রগুলি হলঃ i) পরিবেশবিদ্যা শিখনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বিচার করা । ii) পরিবেশবিদ্যা শিক্ষণ-শিখনে ব্যবহৃত শিক্ষণ কৌশল, শিক্ষণ পদ্ধতি, শিক্ষণ উপকরণ ইত্যাদির যথার্থতা নির্ধারণ । iii) পরিবেশবিদ্যা পাঠক্রমের উপযুক্ততা, প্রয়োজনীয় পুনর্বিন্যাস, পরিকল্পনা গ্রহণ ইত্যাদি নির্দিষ্টকরণ । iv) পরিবেশবিদ্যা কক্ষের আদর্শ শিক্ষণ পরিবেশ তৈরির উপাদান চিহ্নিতকরণ ও প্রচলিত পরিবেশের ত্রুটি নির্ণয় ক্ষেত্রে । v) পরিবেশবিদ্যা শিক্ষণ-শিখন প্রক্রিয়ার অগ্রগতির হার নির্ণয় ইত্যাদি ।
5. উন্নত মূল্যায়ন পদ্ধতির প্রধান কয়টি ধর্ম রয়েছে ?
উঃ উন্নত মূল্যায়ন পদ্ধতির প্রধান চারটি ধর্ম রয়েছে, যথাঃ i) মূল্যায়ন হবে যথার্থ, ii) মূল্যায়ন হবে নির্ভরযোগ্য, iii) মূল্যায়ন হবে ন্যায্য এবং iv) মূল্যায়ন হবে নমনীয় ।
6. পরিবেশবিদ্যায় যথার্থ মূল্যায়ন বলতে কী বোঝায় ?
উঃ পরিবেশবিদ্যা মূল্যায়ন কালে মূল্যায়নের যে গুণের বা ধর্মের দ্বারা পরিবেশবিদ্যা শিখনের উদ্দেশ্য এবং শিখন অভিজ্ঞতার প্রাসঙ্গিকতা বজায় থাকে তাকে যথার্থ মূল্যায়ন বলা হয় । এরুপ মূল্যায়ন অপরিহার্য শিখন দক্ষতা, জ্ঞান এবং পারদর্শিতার মাত্রা ও মূল্যবোধ কেন্দ্রিক হয়ে থাকে ।
7. পরিবেশবিদ্যায় নির্ভরযোগ্য মূল্যায়ন বলতে কী বোঝায় ?
উঃ মূল্যায়নকালে শিক্ষক/শিক্ষিকা বিভিন্ন ধরনের অভীক্ষার মাধ্যমে মূল্যায়ন করলেও যে সমস্ত মূল্যায়ন কৌশল বাস্তবসম্মত সুসংহত ফলাফল উপস্থাপনে সক্ষম হয় তাকে পরিবেশবিদ্যায় নির্ভরযোগ্য মূল্যায়ন বলা যায় । যেমনঃ নৈর্ব্যক্তিক মূল্যায়ন রচনাধর্মী মূল্যায়ন থেকে অধিক নির্ভরযোগ্য ।
8. পরিবেশবিদ্যায় মূল্যায়ন ন্যায্যতা বলতে কী বোঝায় ?
উঃ মূল্যায়নকালে শিক্ষার্থীদের প্রতি কোনরূপ পক্ষপাতিত্ব না করে শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিত্ব ও ব্যক্তিগত অভিরুচি বিষয়টির প্রতি আলোকপাত করে যখন কার্যাবলীর মূল্যায়ন করা হলে তাকেই পরিবেশবিদ্যায় মূল্যায়ন ন্যায্যতা হিসাবে ধরা হয় ।
9. পরিবেশবিদ্যায় মূল্যায়ন নমনীয়তা বলতে কী বোঝায় ?
উঃ নমনীয় মূল্যায়ন-উপকরণ ও প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বোধগম্যতার স্তর যাচাই এর মূল্যায়ন প্রক্রিয়াই হল পরিবেশবিদ্যায় মূল্যায়ন নমনীয়তা । এই নমনীয়তার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের দুর্বল দিকের অনুসন্ধান করা হয় ।
10. পরিবেশবিদ্যা শিক্ষণ-শিখন মূল্যায়নের কৌশলগুলি কিকি ?
উঃ পরিবেশবিদ্যা শিক্ষণের পূর্বে, পরিকল্পনাকালীন স্তরে, পাঠদান প্রক্রিয়াকালে এবং শিক্ষণ সমাপ্তির পর শিক্ষার্থীর আচরণ পরিবর্তনের পরিমাপ করতে মূলত তিন ধরনের মূল্যায়ন কৌশল অবলম্বন করা হয়, যথাঃ i) বিষয়মূখী কৌশল (Subjective Techniques), ii) উদ্দেশ্যমূখী কৌশল (Objective Techniques) এবং iii) প্রতিফলন কৌশল (Projective Techniques) ।
No comments:
Post a Comment